অতিবর্ষণে সাতকানিয়ায় বন্যা আতঙ্ক
কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার বাসিন্দারের মনে বন্যা আতঙ্ক ভর করেছে। পাহাড়ি ঢলে সাঙ্গু নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। রবিবার রাত থেকে পাহাড়ি ঢল ও প্রবল বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন নদী ও খালের পানি বাড়ার পাশাপাশি নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, হাঙ্গর খালের পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি এলাকার লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। এ ছাড়াও পাহাড়ি ঢলের পানি কেরানীহাট-বান্দরবান মহাসড়কের দস্তিদার হাট অংশের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়াও কেঁওচিয়া বুচির পাড়ার আবদুল হামিদ সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকলে উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হতে পারে। ইতোমধ্যে ছদাহা ছাড়াও ঢেমশা, সোনাকানিয়া, সাতকানিয়া সদর ও নলুয়াসহ উপজেলার প্রায় ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
সাঙ্গু নদীর বাজালিয়া অংশের চৌধুরী পাড়া এলাকার বাঁধটির কাজ অসম্পূর্ণ থেকে যাওয়ায় জনমনে আতঙ্ক দেখা গেছে। কয়েক দফা বরাদ্দের পরও বাঁধটির কিছু অংশ অসম্পূর্ণ থেকে যাওয়ায় বন্যা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে স্থানীয়রা। বিগত বছরগুলোতে এ বাঁধ দিয়ে নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করার ফলে নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে বন্যা হয়েছে। সাঙ্গুর পানি লোকালয়ে প্রবেশ ঠেকাতে বাঁধটির কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
বাজালিয়ার বাসিন্দা ও স্থানীয় সংবাদকর্মী সাইফুল ইসলাম ও আরিফুল ইসলাম বলেন, বাজালিয়ার চৌধুরী পাড়া বাঁধটির চলমান কাজ এখনও অসম্পূর্ণ থাকায় বাজালিয়াবাসী বন্যা আতঙ্কে রয়েছে।
বাজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাপস কান্তি দত্ত বলেন, পাহাড়ি ঢলে সাঙ্গু নদীতে ভেসে আসা কাঠ সংগ্রহে ব্যস্ত লোকজনকে সতর্ক করা হচ্ছে। এ ছাড়াও নদীর তীরে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ও সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নেওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। আশ্রয়ার্থীদের জন্য খাবারেরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন বিশ্বাস বলেন, বন্যা মোকাবেলার আগাম প্রস্তুতির অংশ হিসেবে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের সরে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া বিগত বন্যায় নৌকার সংকটে ছিল সাতকানিয়াবাসী। তাই এবার ইউপি চেয়ারম্যানদের অতিরিক্ত নৌকা সংগ্রহে রাখার জন্য বলা হয়েছে। সাইক্লোন সেল্টার প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি খাদ্য সংকট মেটাতে শুকনো খাবারেরও ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে।