চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের ট্রেনে তরুণী ধর্ষণের দায় স্বীকার করেছে চার যুবক

চট্টগ্রামের ট্রেনে তরুণীকে ধর্ষণের দায় স্বীকার করেছে ক্যাটারিং সার্ভিসে কর্মরত চার কর্মচারী। দুই দিনের রিমান্ডে আনার পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকারোক্তি দিয়েছে। ধর্ষণের ওই ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাড়া একটি ভিডিও নিয়ে নতুন করে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে একটি মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে পুলিশ।

২৫ জুন দিবাগত রাত সাড়ে চারটার দিকে উদয়ন এক্সপ্রেসে বান্দরবানের এক তরুণী ধর্ষণের শিকার হন। রাত ১০টায় সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনটি ঘটনার সময় কুমিল্লার লাকসাম এলাকা অতিক্রম করছিল। পরে ট্রেনটি ২৬ জুন সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম স্টেশনে এসে পৌঁছায়।

এদিকে টানা দুই দিনের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) চট্টগ্রামের রেলওয়ে থানায় আদালতের মাধ্যমে অভিযুক্ত চারজনকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এসএ করপোরেশনের কর্মী এই চার অভিযুক্ত হলেন— ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের ভাদেশ্বরা এলাকার বাছির মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ জামাল, জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার কুলকান্দি মধ্যপাড়ার আব্দুল আজিজের ছেলে রাশেদুল হক, একই জেলার সরিষাবাড়ি উপজেলার কুমারপাড়া এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে শরীফ মিয়া ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার কুতুবপুর এলাকার গোলাম নবীর ছেলে আব্দুর রব রাসেল। এ ঘটনার পরপরই চট্টগ্রাম-সিলেট রুটে চলাচলকারী উদয়ন ও পাহাড়িকা এক্সপ্রেসে খাবার সরবরাহকারী এসএ করপোরেশনের ক্যাটারিং সার্ভিস স্থগিত করে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপকের কার্যালয় থেকে আদেশ জারি করা হয়।

রেলওয়ে থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত চারজনই জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এই সঙ্গে প্রাসঙ্গিক আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও দিয়েছে তারা।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ওই তরুণী জানান, গত ২৩ জুন সিলেটে ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন তিনি। ২৫ জুন রাতে সেখান থেকে বান্দরবানে যাওয়ার জন্য ভাইয়ের বন্ধুর সঙ্গে সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে আসেন। উদয়ন এক্সপ্রেসের টিকিট না পেয়ে ভাইয়ের বন্ধু তাকে খাবার বগিতে তুলে দেন। তখন সেখানে ২০ থেকে ২৫ জন যাত্রী ছিল। ট্রেন লাকসাম স্টেশনে পৌঁছলে পাঁচজন ছাড়া সবাই নেমে যায়। এরপর এসএ করপোরেশনের চার কর্মী ঘুমানোর কথা বলে খাবার বগিতে থাকা দুই যাত্রীকে বের করে দেয়। তখন সেখানে ওই তরুণী ছাড়া একজন বয়স্ক ব্যক্তি ও একজন নারী ঘুমিয়ে ছিলেন। শুরুতে জামাল এসে তরুণীর শ্লীলতাহানি করে। একপর্যায়ে শরীফ, রাশেদ ও রাসেল এসে তার সঙ্গে যোগ দেয়। তরুণী বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে সবাই তাকে রান্নাঘরে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে খাবার বগির দুই যাত্রী জেগে উঠে চিৎকার করলে পুলিশ ও যাত্রীরা এসে জামাল, রাশেদ ও শরীফকে আটক করে। এ সময় রাসেল পালিয়ে যায়। ট্রেন থেকে নেমে ওই তরুণী পুলিশের কাছে অভিযোগ দিলে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২৭ জুন ভোরে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানার কুতুবপুর এলাকা থেকে অপর আসামি আবদুর রব রাসেলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *