কর্ণফুলিচট্টগ্রাম

ধান ক্ষেতে সেচের পানি দেয়া নিয়ে মারামারি, পিতা-পুত্রের মাথায় সেলাই

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানাধীন বৈরাগ ইউনিয়নে সেচ পাম্প দিয়ে জমিতে পানি দেওয়ার টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে হিন্দুপাড়া এলাকার রতন গুপ্ত (৫৫) ও তাঁর ছেলে হিমেল গুপ্ত (২৬) কে মারধর করার ঘটনায় কর্ণফুলী থানায় মামলা হয়েছে।

শুক্রবার (৩ মে) দুপুর সাড়ে ১১টার সময় বৈরাগ ইউনিয়নের দক্ষিণ বন্দর (৩নং ওয়ার্ড) মহালখান এলাকার হিন্দু পাড়ায় মারামারির ঘটনাটি ঘটে। এতে পিতা পুত্রের মাথায় ১৮টি সেলাই দেওয়া হয়েছে বলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়।

এ ঘটনায় ৪ মে (শনিবার) রাত ১ টার সময় আহত রতন গুপ্তের ছেলে রুবেল গুপ্ত (৩৮) বাদি হয়ে চার (৪) জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহির হোসেন।

মামলায় আসামিরা হলেন-কর্ণফুলীর দক্ষিণ বন্দর শাহাদাত নগর এলাকার (৩নং ওয়ার্ড) শাহাদাত হোসেনের ছেলে মো. ইব্রাহিম (৫৫), মো. ইব্রাহিমের ছেলে ফরহাদ হোসেন (৩৩) ও রাহাত হোসেন (৩১) ও একই এলাকার মামুন হোসেন চৌধুরী’র ছেলে রিয়াদ হোসেন চৌধুরী (২৩)। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরো ৪/৫ জন কে আসামি রাখা হয়।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন (৩রা মে) সকাল ৮ টায় বৈরাগ ইউনিয়নের মহালখান সংলগ্ন হিন্দু পাড়া এলাকার রতন গুপ্ত (৫৫) ও তাঁর মেঝ ভাই রুমেল গুপ্ত (৩৫) ও ছোট ভাই হিমেল গুপ্ত (২৫) নিজেদের জমিতে পাকা ধান কাটার কাজ করেছিলেন।

সকাল ১০টার দিকে আসামি মো. ইব্রাহিম মাঠে এসে রতন গুপ্তের কাছে জমিতে সেচের পানি দেওয়ার টাকা দাবি করেন। রতন গুপ্ত সেচ মালিক পংকজ সরকার (৩৯) এর সাথে কথা বলে সেচের টাকা পরিশোধ করার কথা জানান। এতে রতন ও পঙ্কজের মধ্যে সামান্য কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে পঙ্কজ চলে যায়। এরপর রতন গুপ্ত মাঠে কাজ করতে থাকেন। এরমধ্যে সকাল পৌঁনে ১১ টার দিকে ভিকটিমের ছেলে রুমেল গুপ্ত (৩৫) তাঁর বাবা ও ভাইয়ের জন্য পানি আনতে দোকানে গেলে পথরোধ করে ইব্রাহিম ও ইব্রাহিমের ছেলেরা মারধর করার চেষ্টা করেন। তবে এলাকার লোকজন জড়ো হওয়ায় তারা চলে যান।

একই দিন আবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আসামি ইব্রাহিমের নেতৃত্বে উল্লেখিত আসামিসহ কিছু লোকজন কিরিচ, ছোরা, লোহার রড ও লাঠিসোঁটা নিয়ে ধানের জমিতে এসে অতর্কিত হামলা চালিয়ে রতন গুপ্ত ও হিমেল গুপ্ত কে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করেন।

পরে স্থানীয় লোকজন পিতা-পুত্রকে উদ্ধার করে সিএনজি টেক্সি যোগে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

অতঃপর চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক আহতদের শারীরিকভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ক্যাজুয়ালিটি বিভাগে ভর্তি দেন। বর্তমানেও চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা যায়।

এ প্রসঙ্গে কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহির হোসেন বলেন, ‘দক্ষিণ বন্দরের বৈরাগ ইউনিয়নের মহালখানে ধানি জমিতে সেচ দেওয়ার টাকা নিয়ে মারামারির ঘটনায় ৪ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *