নামাজে মেয়েদের হঠাৎ পিরিয়ড শুরু হলে করণীয়
হায়েজ, মাসিক, ঋতুস্রাব বা পিরিয়ড নারীদেহের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। প্রতি মাসে সঠিক সময়ে মাসিক শুরু হওয়ার মাধ্যমে নারীর শারীরিক সুস্থতা ও সন্তান ধারণে সক্ষমতা নিশ্চিত হয়।
ইসলামী শরিয়তের বিধান অনুযায়ী একজন নারীর ঋতুস্রাবের (পিরিয়ড) সর্বনিম্ন সময় তিন দিন আর সর্বোচ্চ সময় ১০ দিন।
তিন দিন থেকে ১০ দিন পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদে মাসিক ঋতুস্রাবকালীন (পিরিয়ড) নামাজ-রোজা করার প্রয়োজন নেই। এই দিনগুলোতে নারীর যথাসাধ্য বিশ্রাম দরকার। এ জন্য এই দিনগুলোতে ইসলাম নারীকে নামাজ-রোজা থেকে দায়মুক্তি দিয়েছে।
কোনো কারণে ঋতুস্রাবের সময় (পিরিয়ড) ১০ দিনের চেয়ে বেড়ে গেলে নিজের আগের অভ্যাস অনুপাতে যে মেয়াদ আছে, ওই দিন পর্যন্ত বন্ধ রেখে এর পর থেকে নামাজ-রোজা পালন করবে।
আর যদি ১০ দিনের ভেতরই শেষ হয়ে যায়, তাহলে রক্ত আসার শেষ দিন পর্যন্ত ঋতুস্রাব (পিরিয়ড) গণ্য করে নামাজ-রোজা ইত্যাদি বন্ধ রাখবে। এ অবস্থায় নামাজের কাজা না থাকলেও পরবর্তী সময়ে রোজা কাজা করে নেবে। (আদ্দুররুল মুখতার : ১/৩০০-৩০১)
ঋতুস্রাব বা পিরিয়ডকালীন সময়ে নামাজ, রোজা এবং এজাতীয় ধর্মীয় বিধান মানতে হয় না- তা মোটামুটি সবারই জানা। তবে কখনো নামাজ পড়াকালীন সময়ে কোনো নারীর ঋতুস্রাব বা পিরিয়ড শুরু হলে তার করণীয় বিষয়ে জানতে চান অনেকে। যেমন এ বিষয়ে জানতে চেয়ে একজন প্রশ্ন করেছেন-
একজন নারী জোহরের নামাজের প্রায় শেষ ওয়াক্তে নামাজে দাঁড়িয়েছিলেন। নামাজ চলাকালেই তার মাসিক ঋতুস্রাব শুরু হয়ে যায়। তখন তিনি নামাজ ছেড়ে দেন। আমার জানার বিষয় হচ্ছে, এমতাবস্থায় সেই নারীর করণীয় কী? পবিত্র হওয়ার পর ওই জোহর নামাজটি কি কাজা আদায় করতে হবে?
এ বিষয়ে ইসলামি আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদদের মতামত হলো- যেহেতু জোহর ওয়াক্তের ভেতরই যেহেতু পিরিয়ড শুরু হয়ে গেছে তাই সে দিনের জোহর নামাজ মাফ হয়ে গেছে। ওই জোহর-পরবর্তীতে কাজা করতে হবে না।
এ ক্ষেত্রে ওয়াক্তের শেষে নামাজ শুরু করলেও একই বিধান। কেননা কোনো ওয়াক্তের একেবারে শেষেও যদি মাসিক শুরু হয় তা হলেও সে ওয়াক্তের নামাজ আদায় করা না হয়ে থাকলে তা মাফ হয়ে যায়। পরবর্তীতে কাজা করতে হয় না।
বিশিষ্ট তাবেয়ি ইবরাহীম নাখায়ি রহিমাহুল্লাহ বলেন, যে ওয়াক্তে নারীর মাসিক শুরু হয় ওই নামাজ কাজা করা তার ওপর আবশ্যক নয়। (কিতাবুল আসল : ১/২৮৬; রদ্দুল মুহতার : ১/২৯১)