নেই মিটার, পাথরঘাটায় ৪ মাস ধরে আসছে বিদ্যুৎ বিল
চলতি বছরের মার্চ মাসের শুরুতে বরগুনার পাথরঘাটার নতুন বাজারে আগুন লেগে ১১ টি দোকান পুড়ে যায়। সে সময় দোকানের মালামালের সাথে বিদ্যুৎ এর লাইনসহ মিটারও পুড়ে যায়৷ সেই থেকে দোকানগুলোতে বিদ্যুৎ-এর সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে৷ অথচ ৪ মাস ধরে মিটার ছাড়াই প্রতিমাসে বিদ্যুৎ বিলের কাগজ দিয়ে যাচ্ছে পল্লি বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। এমন অভিযোগ পুড়ে যাওয়া দোকান মালিকদের।
দোকান মালিকরা জানান, যেখানে মিটারের রিডিং দেখে বিল প্রস্তুত করার কথা। সেখানে মিটার নেই, মিটারের সংযোগ নেই অথচ প্রতিমাসের বিলের কাগজ ধরিয়ে দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, গত ১৩ মার্চ সকালে গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে ১১ দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এসময় বিদ্যুতের তার ও মিটার পুড়ে যায়।
পুড়ে যাওয়া দোকান মালিক সোহাগ সিকদার বলেন, প্রতিমাসে বিদ্যুৎ বিল দিয়ে যাচ্ছে। আমি তাদের কয়েকবার বলছি আমার মিটার চালু নেই। এরপরও বিষয়টি আমলে না নিয়ে গত চার মাস ধরে বিল কাগজ দিয়ে আসছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
তিনি আরও বলেন, প্রতিমাসে বিদ্যুৎ বিল আসছে ৭০০-১০০০ টাকা করে। চলতি জুন মাসের বিদ্যুৎ বিলের কাগজে আমার খরচ দেখানো হয়েছে ৫৫ ইউনিট। সেখানে বিল দেখানো হয়েছে ৭৫৩ টাকা। তিনি বলেন, যে দোকানে বিদ্যুৎ এর সংযোগই নেই চার মাস সেখানে এত এত ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ হলো কিভাবে?
আরেক পুড়ে যাওয়া ব্যাবসায়ী সঞ্জীব বলেন, আগুনে মিটার পুড়ে যাওয়ার পর পল্লী বিদ্যুতের লোকজন মিটার খুলে নিয়ে গেছে। কিন্তু এখনো আমার নামে বিলের কাগজ আসছে। পল্লি বিদ্যুৎ এর এমন ভুতুড়ে বিল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সাধারণ গ্রাহকরা।
এছাড়াও মিটারের রিডিংয়ের সাথে মিল না রেখে ভুতুড়ে বিল দেয়ার অভিযোগ রয়েছে গ্রাহকদের।
পাথরঘাটা পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক আল মামুন জানান, প্রতি মাসে ৭০০ থেকে ৮০০ করে বিল আসতো। হঠাৎ করে আগষ্ট মাসে তা উঠিয়ে দেয় প্রায় ৪০০০ টাকা। আবার জুন মাসে এসেছে প্রায় ৫০০০ টাকা।
গ্রাহকরা জানান বিদ্যুতের ব্যাবহার না বাড়লেও দিন দিন বিলে টাকার পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পাথরঘাটা পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসে এর কারণ জানতে গেলেও গ্রাহকের সাথে দুর্ব্যাবহার করার অভিযোগ রয়েছে বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। এছাড়াও নানা অযুহাত দেখিয়ে তারা বিভিন্ন সময় লোডশেডিং দিয়ে আসছে বলে জানান গ্রাহকরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাথরঘাটা পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) আব্দুস সালাম জানান, জনবল সংকটের কারণে গ্রাহকদের সেবা দিতে বিঘ্ন হচ্ছে। যদি মিটারের সাথে বিলের কাগজের মিল না থাকে তাহলে ছবি তুলে অফিসে নিয়ে আসলে ঠিক করে দেয়া হবে। এছাড়াও আমাদের কাছে গ্রাহকরা অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।