পরীক্ষার ফরম পূরণের শেষ দিনই ডেঙ্গুতে মৃত্যু
মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসার কথা ছিল কামরুল হাসান আলভির। সেভাবে প্রস্তুতিও নিচ্ছিল। ভালোভাবে উত্তীর্ণ হয়েছিল নির্বাচনী পরীক্ষায়।সোমবার ছিল তার স্কুলে পরীক্ষার ফরম পূরণের শেষ দিন। আর সেদিনই এই কিশোর মারা গেল ডেঙ্গুতে।
আগ্রাবাদ মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ১৫ বছর বয়সী কামরুল হাসানের। ছেলেকে হারিয়ে শিক্ষক দম্পতি পাগলপ্রায়।
কামরুলের মা আগ্রাবাদ তালেবিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও বাবা আতাউর রহমান বাঁশখালী আলাওল সরকারি কলেজের শিক্ষক। নগরের আগ্রাবাদ হাউজিং সোসাইটি এলাকায় তাঁরা বসবাস করেন। গ্রামের বাড়ি আনোয়ারা উপজেলায়। দুই ভাইয়ের মধ্যে কামরুল বড়। ছোট ভাইও কিছুদিন আগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল। একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে সে বাসায় ফেরে। কিন্তু সুস্থ হয়ে আর ফিরতে পারল না কামরুল।
ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার পর কামরুলকে ভর্তি করা হয়েছিল মা ও শিশু হাসপাতালে। ১৩ দিন সেখানে ডেঙ্গু জ্বরের সঙ্গে লড়াই করেছে সে। শেষ ১১ দিন ছিল নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে। সেখানেই সে মারা যায়।হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ফাহিম রেজা বলেন, ‘ছেলেটা দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিল। এরপর আজ মারা যায়।’
হালিশহরের হাউজিং সেটেল্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ছিল সে। পরীক্ষার ফরম পূরণ করার আগেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয় সে। শেষ পর্যন্ত আর ফরম পূরণ করতে পারল না।
জানাজায় ইমামতি করা মাওলানা আইয়ুব আলী আনসারি মুসল্লিদের উদ্দেশে বলেন, ‘কামরুল প্রতিদিন নামাজ পড়ত মসজিদে এসে। এত ছোট ছেলের জানাজা আমাকে পড়াতে হবে ভাবিনি।প্রথম জানাজা শেষে কামরুলের মরদেহ গ্রামের বাড়ি আনোয়ারায় নেওয়া হয়। সেখানে দ্বিতীয়বার জানাজা শেষে দাফন করা হয়।
কামরুলের মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ পুরো পরিবার। শোকের ছায়া নেমে আসে পুরো এলাকায়। কামরুলের আত্মীয় চান্দগাঁওয়ের হাসান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাহমিনা শারমিন বলেন, ছেলের সামনে পরীক্ষা। মা–বাবার কত চিন্তা। এখন সব চিন্তার অবসান।