রাজনীতি

পাওয়ার প্লান্টের আধিপত্য নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৫

বরগুনার আমতলীতে চায়নাদের নির্মাণাধীন পাওয়ার প্লান্টের ভাগ ভাটোয়ারা নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৫জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষে গুরুতর আহত আবুল কালাম আজাদকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

বুধবার (২৮ আগস্ট) বেলা ১২টার সময় আমতলী সদর ইউনিয়নের খুড়িয়া খেয়াঘাটের চলাভাংগা নামক স্থানে সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটেছে। দুপক্ষের সংঘর্ষে এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে।

আমতলী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধার নেতৃত্বে দোকান ভাঙচুরসহ মারধর ও লুটপাটের ঘটনা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগ স্থানীয় বিএনপির একাংশের। অভিযুক্ত তুহিন মৃধার অভিযোগ, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতির ছেলের নেতৃত্বে হামলা সংঘটিত হয়েছে।

জানা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নে খুরিয়ার খেয়াঘাট এলাকায় ১১টি দোকানে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম ও কয়েকটি দোকানের প্রায় ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা ও মালামাল লুটের অভিযোগ করেন স্থানীয় দোকানীরা। এ সময় দোকানদার, সাংবাদিকসহ ৫ জন আহত হন। আহতরা হলেন- আবুল কালাম আজাদ, মিল্টন মৃধা, সাংবাদিক এইচ এম রাসেল, মিলন মৃধা ও হাসিনা বেগম।

স্থানীয় দোকানদার হুমায়ুন কবির মিল্টন মৃধা বলেন, আমি পাওয়ার গ্রীড সাব স্টেশনে লোকজন নিয়ে কাজ করাই। সে সুবাধে আমতলী বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধা ও শামসুল হক চৌকিদার তাদের লোকজন নিয়ে চাঁদা দাবি করে আমার কাছে। আমি চাঁদা না দেয়ায় আমার দোকানে এবং আমার ওপর হামলা চালায়। আমার দোকান ভাঙচুর করে ২ লক্ষের বেশি টাকা ও মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।

সংঘর্ষে আহত মিল্টন তিনি আরো বলেন, আমার ভাইকে মারধর করা অবস্থায় তাকে বাঁচাতে গেলে আমাকেও তারা মারধর করে রক্তাক্ত করে।

স্থানীয় হাসিনা বেগম বলেন, দোকানপাট ভাঙচুর ও মারামারি দেখে তাদের ছাড়াতে গেলে আমিও আহত হই। আমারও হাতে জখম হয়। কাউকে চিনতে পারিনি। তবে, তারা ৩০-৩৫ টি মোটরসাইকেল নিয়ে আসছিলো।

নাম না প্রকাশ করতে ইচ্ছুক এমন কয়েকজন বলেন, আমতলী উপজেলার বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধা ও শামসুল হক চৌকিদার সহ তাদের লোকজন নিয়ে এ হামলা চালায়।

এব্যাপারে আমতলী উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি জালাল উদ্দিন ফকির বলেন, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধা, সামসুল হক চৌকিদার ও হেলাল চৌকিদারসহ বেশ কয়েকজন আমতলী পাওয়ার প্লান্টে চাঁদা তুলতে যায়। এ সময় স্থানীয় লোকজন মিলে তুহিন মৃধাকে লাঞ্চিত করেছে। তিনি আরো বলেন, তুহিন মৃধার লোকজন খুড়িয়ার খেয়াঘাটে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করেছে।

আমতলী বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি একটা দলীয় প্রোগ্রামের জন্য যাওয়ার পথে ওখানে স্থানীয় লোকজনের সাথে চাঁদা দাবির বিষয়ে তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য সন্ধ্যায় তাদের আসতেও বলি। আসার পথে বিপরীতে থাকা লোকজন অতর্কিত হামলা চালায়। তাদের হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়। তার মধ্যে ৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমার ওপর আনা সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি এর সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ বিচার দাবি করি।

তুহিন মৃধা বলেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জালাল উদ্দিন ফকিরের ছোট ছেলে রাহাত ফকির পাওয়ার প্লান্টে চাঁদা বাদী করে। আমি তা প্রতিহত করতে গেলে তার লোকজন হামলা করেছে।

আমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী শাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *