প্রকৌশল বিভাগের ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেন মেয়র
নগরের সৌন্দর্য বাড়াতে কোনো সড়কে নৌকা, প্রজাপতির আদলে সড়কবাতি লাগিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। বেশ কিছু সড়কে আছে সড়কবাতি। কিন্তু বেশিরভাগ সময় এসব লাইট বন্ধ থাকে। কখনো একপাশ জ্বলে তো অন্যপাশ বন্ধ।
এ নিয়ে ক্ষোভ পথচারীসহ নগরবাসীর। সেই ক্ষোভই যেন ফুটে উঠলো চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর কণ্ঠে। তিনি প্রশ্ন করেন, মাসকে মাস লাইট কেন বন্ধ থাকবে?
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম (টিআইসি) মিলনায়তনে চসিকের ষষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের ৩৫তম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে মেয়র এ প্রশ্ন রাখেন।
দায়িত্ব পালনে কারও কোনো গাফিলতি সহ্য করা হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, চসিকের তত্ত্বাধবানে চলমান প্রকল্পগুলোর গুণগতমান রক্ষায় ঠিকাদারদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। কোনো ঠিকাদার কাজ নিয়ে ফেলে রাখতে পারবে না এবং নিম্নমানের কাজও করতে পারবে না। কেউ এ ধরনের করলে ফাইনাল বিল দেবো না। কাজ করলে কাজের পণ্যসামগ্রী এবং কাজ শেষে কাজের গুণগতমান পরীক্ষায় আমরা ল্যাব করে দিয়েছি। সেখান থেকে পরীক্ষা করে তারপর বিল দেওয়া হবে। এ বিষয়ে কোনো ক্ষমা নেই, কারো কোনো তদবিরও শুনবো না।
চসিকের প্রকৌশল বিভাগের উদ্দেশে মেয়র বলেন, শহরের সৌন্দর্য ও নিরাপত্তার স্বার্থে মিড আইল্যান্ডগুলো উচুঁ করে নির্মাণ করা হচ্ছে। যাতে মানুষ যত্রতত্র রাস্তা পারাপার করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় না পড়ে। প্রকৌশল বিভাগকে নির্দেশ দিচ্ছি ফেব্রুয়ারির মধ্যে নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে জেব্রা ক্রসিং নির্মাণ করুন। আমাদের রাস্তাগুলো ১০ থেকে ১২ টনের উপযোগী করে বানানো। কিন্তু অনেকে অবৈধভাবে ৩০ থেকে ৪০ টন পণ্যবাহী গাড়ি চালানোর কারণে অনেক রাস্তা ভেঙে গেছে। এ ধরনের সড়কগুলো দ্রুত সংস্কার করুন।
নির্বাহী প্রকৌশলীদের অধীনে সুপারভাইজাররা আছেন, সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়াররা আছেন। অথচ রাস্তায় গর্ত হয়ে থাকে, ফুটপাথের স্লাব ভেঙে গেছে এগুলো আমাকে জানতে হয় হোয়াটসঅ্যাপে নাগরিকদের ম্যাসেজ দেখে। এসব বিষয়ে প্রতিবেদন দেওয়া হয় না কেন? চসিকের বিদ্যুৎ বিভাগের সুপারভাইজাররা কে কোন এলাকায় দায়িত্বে আছেন তা কাউন্সিলরদের জানিয়ে দেবেন। কোনো প্রকল্পের কাজ যাতে নিম্নমানের না হয় সে বিষয়ে কাউন্সিলরদের নজর রাখতে হবে।
সভায় ট্রাফিক বিভাগের এডিসি মো. কাজী হুমায়ুন রশীদ বলেন, হকারদের উঠিয়ে দিলেও তারা আবারও বসে যায়। এজন্য মেয়র মহোদয়ের নেতৃত্বে চট্টগ্রামের সব সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে সম্মিলিতভাবে অভিযান পরিচালনা প্রয়োজন। জিইসি মোড়ে সেন্ট্রাল প্লাজার সামনে ত্রিমুখী সড়কে নিয়মিত দুর্ঘটনা হচ্ছে যা মোকাবিলায় একটি গোলচত্বর নির্মাণ করা জরুরি। পাশাপাশি নগরে পর্যাপ্ত জেব্রা ক্রসিং নেই। এজন্য পর্যাপ্ত জেব্রা ক্রসিং নির্মাণ করা জরুরি।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী রাজিব দাশ জানান, সিডিএর একটি প্রতিনিধি এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্পগুলো নগরের কোন কোন পয়েন্টে নামবে তা চসিকের কাছে উপস্থাপন করবে।
সভায় চসিকের সচিব খালেদ মাহমুদ, প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলরসহ চসিকের বিভাগীয় ও শাখা প্রধান এবং নগরের বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।