খেলা

বিশ্বকাপ ব্যর্থতার রহস্য উদঘাটন, মাস্টারমাইন্ড ২ জন

ভারতে অনুষ্ঠিত গেল ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল ও তাদের খেলা নিয়ে সমালোচনা যেন এখনও খবরের শিরোনাম হয়ে রয়েছে। কারণ এসময় তামিম-সাকিব দ্বৈরথ থেকে শুরু করে, ব্যাটিং অর্ডার, দল নির্বাচন সবকিছু নিয়েই এক তুমূল কান্ডের সৃষ্টি হয়েছিল বাংলাদেশের ক্রিকেট পাড়ায়। এত সব ঘটনার মধ্যেই নতুন করে যুক্ত হয় বিশ্বকাপে ব্যর্থতাও।

আর সেই বিশ্বকাপ ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধানে মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদনে বের হয়ে এসেছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। যেগুলো প্রকাশ করা হলে নতুন করে তদন্তের দাবি উঠতে পারে। আর এ কারণে প্রতিবেদনের অনুলিপি বোর্ড পরিচালকদের দেওয়া হয়নি।

ক্রিকেটারদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বকাপ দলে অস্থিরতা তৈরিতে দু’জন পরিচালকের দায় খুঁজে পেয়েছে কমিটি। জানা যায়, বিশ্বকাপ দলের সঙ্গে থাকা দু’জন পরিচালকের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলেছেন ক্রিকেটাররা। যা অস্বস্তিতে ফেলেছিল মূল্যায়ন কমিটিকেও।

এনায়েত হোসেন সিরাজের মূল্যায়ন কমিটি বিশ্বকাপ-সংশ্লিষ্ট সবার সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে। শুরুর দিকেই সাক্ষাৎকার নেয়া হয় টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন, ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস, প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু (সাবেক), নির্বাচক হাবিবুল বাশারের। সবার শেষে নেওয়া হয় অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের সাক্ষাৎকার।

বিশ্বকাপ দলের সদস্য না হলেও মূল্যায়ন কমিটির মুখোমুখি হতে হয় তামিম ইকবালকে। বিশ্বকাপ দলে কেন তাকে নেয়া হয়নি সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। মূল্যায়ন কমিটির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তামিম নিজের মতো করে নিজের সঙ্গে ঘটা পুরো ঘটনার বর্ণনা করেছেন।

বিসিবি সভাপতি ও তামিমের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির পেছনে প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের দায় খুঁজে পেয়েছে কমিটি। একাধিক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মনে করেন, বিশ্বকাপে তামিম না থাকায় দলের ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে।

বিসিবির একজন পরিচালক জানান, তামিম ইকবাল ও মাশরাফি বিন মুর্তজার পরামর্শে হাথুরুসিংহেকে দ্বিতীয় দফায় কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু অধিনায়ক কোচের কাছ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা না পাওয়ায় দূরত্ব বাড়তে থাকে। পরিস্থিতি বেশি খারাপ হওয়ায় তামিম হুট করে অবসরের ঘোষণা দেন। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে অবসর ভাঙলেও নেতৃত্ব ছেড়ে দেন তামিম। কিন্তু কোচ কোনোভাবে চাননি তামিম বিশ্বকাপ খেলুক।

মূল্যায়ন কমিটির একজন জানান, ক্রিকেটারদের একাংশ মনে করে বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে প্রতি ম্যাচে ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন করাতে দল হিসেবে ভালো খেলতে পারেনি দল। অধিনায়ক সাকিবের ইচ্ছায় এই ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন করা হয়েছে বলে বক্তব্য দিয়েছেন হাথুরুসিংহে। সাকিবও অনুরূপ প্রধান কোচকে কাঠগড়ায় তুলেছেন বলে জানায় তদন্ত কমিটি।

তবে মজার বিষয় হচ্ছে সকলে একটি বিষয়ে একমত হয়েছে। সেটি হচ্ছে বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদকে প্রধান কোচ হাথুরুসিংহের চড় মারা বিষয়টি। ক্রিকেটার, টিম ম্যানেজম্যান্ট, পরিচালক বা কোচিং স্টাফের কেউই মূল্যায়ন কমিটিকে কোনো তথ্য দেয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *