চট্টগ্রাম

বিশ্ববাণিজ্যে অন্যতম বড় বাধা হচ্ছে সাইবার অপরাধ

ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স-বাংলাদেশের (আইসিসি-বি) মহাসচিব আতাউর রহমান বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে আমাদের টিকে থাকতে হলে ডিজিটালাইজেশনের কোনো বিকল্প নেই। এজন্য আমাদের উদ্যোগ নিতে হবে।

পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অন্যতম বড় বাধা হচ্ছে সাইবার অপরাধ। এ বিষয়েও আমাদের কাজ করতে হবে।

বাংলাদেশের ট্রেড সাপ্লাই চেইন ফ্যাসিলিটি বাড়ানোর উদ্যোগ হিসেবে ডিজিটাল সেন্টার ইনিশিয়েটিভ নেওয়া হচ্ছে আইসিসির পক্ষ থেকে।

চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (সিসিসিআই) এবং আইসিসি-বির উদ্যোগে ‘ডিজিটালাইজিং ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। বুধবার (১০ জুলাই) সকালে আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে এ বৈঠক হয়।

তিনি বলেন, প্রতি ৩জন শ্রমিকের ১জন আইসিসিভুক্ত প্রতিষ্ঠানের সদস্য। ফলে বিশ্বব্যাপী আইসিসিভুক্ত প্রতিষ্ঠানের চেইন দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। তাই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে আধুনিকায়নে এগিয়ে আসতে হবে।

চেম্বার সভাপতি ওমর হাজ্জাজ বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৫তম অর্থনীতির দেশ। ফলে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বাড়ছে বাংলাদেশের। কিন্তু বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ আমদানি-রপ্তানি হয়ে থাকে কাস্টমসের মাধ্যমে। বাংলাদেশ এখন সর্বত্র ডিজিটাইলাইজড হলেও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এখনও আমরা ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে রয়ে গেছি। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক চেম্বার অব কমার্সের অন্যতম সক্রিয় সদস্য। তাই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে ডিজিটাইলাজেশনের কোনো বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, চিটাগাং চেম্বার ২০০৮ সালে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস অটোমেশনের মাধ্যমে ডকুমেন্টেশন প্রক্রিয়া ৪২ ধাপ থেকে ৭ ধাপে নামিয়ে আনে। কিন্তু পরবর্তী কোনো উদ্যোগ না হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে এখনো আধুনিকায়নের ছোঁয়া লাগেনি। তাই পেপারলেস, ক্যাশলেস ও ফেইসলেস সেবা নিশ্চিত করা গেলে ব্যবসায়ীদের সময় ও অর্থের সাশ্রয় হবে। আরএমজি সেক্টরের রপ্তানিকারকরা সঠিক সময়ে ও নিয়ম মেনে পণ্য পাঠানোর পরও বিদেশি অনেক ক্রেতা রপ্তানি মূল্য পরিশোধ না করে পণ্য ছাড় করিয়ে নেয়। এতে করে রপ্তানিকারকরা আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

এ সব রপ্তানি আয় পরিশোধের জন্য তিনি ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের সহায়তা চান।

বৈঠকে চেম্বার পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, মাহফুজুল হক শাহ, মোহাম্মদ আকতার পারভেজ, লুব-রেফ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক মামুনুর রশিদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক মো. রাফিউল মনির, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের যুগ্ম কমিশনার মারুফুর রহমান, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সহকারী পরিচালক মোরশেদুল হক, রেড সি গেটওয়ে টার্মিনালের হেড অব কমার্শিয়াল সৈয়দ মোহাম্মদ তারেক, এপিএলের (বাংলাদেশ) হেড অব অপারেশন এনামুল হক ও বিএসআরএমের হেড অব কমার্শিয়াল আলী মাহবুব হোসেন বক্তব্য দেন।

বক্তারা বলেন, সরকার ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ফ্যাসিলিটেশনের জন্য বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো নিয়ে কাজ করছে। এর মাধ্যমে সরকারের বাণিজ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন সংস্থাকে একই ছাতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে কাস্টমস এবং বন্দরে অনলাইনে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করা হলেও ডেলিভারি এবং বিভিন্ন ক্লিয়ারেন্সের জন্য ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে যেতে হয়। এ ছাড়াও রয়েছে এইচএস কোড জটিলতা। তাই আমাদের আধুনিকায়নের বাধাগুলো আগে চিহ্নিত করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে আধুনিকায়নে যেতে হবে। এজন্য আমাদের মানসিকতারও পরিবর্তন করা জরুরি।

অনুষ্ঠানে চেম্বার পরিচালক একেএম আক্তার হোসেন, মাহবুবুল হক মিয়া, মোহাম্মদ মনির উদ্দিন, বাফার সহ-সভাপতি খায়রুল আলম (সুজন), ট্রাস্টেড শিপিং লাইন্স লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক ওয়াহিদ আলম, জিপিএইচ ইস্পাত প্রতিনিধি ওসমান গণি চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তিয়ানমি স্টিলফেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *