চট্টগ্রাম

ব্যাংকে নয়, নতুন টাকা ফুটপাতে!

ঈদের দিন শিশু কিশোরদের বিশেষভাবে আকর্ষণ করে ঈদি বা ঈদ সালামি। নতুন চকচকে টাকায় ঈদের সালামি পাওয়াটাই তাদের কাছে আনন্দের। তাই প্রতিবছরই ঈদ উৎসব ঘিরে নতুন টাকার কদর বাড়ে। ব্যাংকের লাইনে দাঁড়িয়ে নতুন টাকা পাওয়া আকাশ কুসুম কল্পনা। তবে হাত বাড়ালে ফুটপাতে কদমে কদমে মিলবে নতুন টাকা।

ঈদ ঘিরে চট্টগ্রাম নগরের নিউমার্কেট, আগ্রাবাদ এলাকায় নতুন টাকার বেচাকেনা জমে উঠেছে। ব্যাংকের দ্বার থেকে ফেরত আসা কিংবা পরিচিত ব্যাংকারদের কাছে ধরণা দিয়েও কাজ না হওয়া লোকজন এখানকার ক্রেতা। ব্যাংকের ঝক্কি-ঝামেলা এড়াতেও কেউ কেউ ভিড় করেন এখানে। ১০০ থেকে ৩০০ টাকা বাড়তি দিলে খুব সহজেই হাতে উঠছে নতুন টাকা।

ব্যাংকারদের দাবি, ব্যাংকের শাখাগুলোতে চাহিদামত নতুন টাকা আসে না। যার কারণে সবার হাতে নতুন টাকা দেওয়া সম্ভব হয় না। অভিযোগ আছে, বড় বড় গ্রাহকদের খুশি করতেই সিংহভাগ শেষ হয়ে যায় নতুন টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, ‘ব্যাংকের শাখাগুলোতে চাহিদা মোতাবেক নতুন টাকা আসেনি। যা আসে বড় বড় গ্রাহকদের দিয়ে খুশি করতে হয়। ব্যাংকে চাকরিজীবী হিসেবে আমাদের ওপরও বন্ধু-বান্ধব আত্বীয়স্বজনের চোখ থাকে নতুন টাকার জন্য। নিজেদের জন্য সীমিত পরিমাণ নিতে পারলেও অন্য কারো আবদার রাখতে পারি না ঠিকমতো।’

গেল কয়েকদিন নগরের নিউ মার্কেট এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, ১০ টাকার নোট হাজারে ২৫০ টাকা, ২০ টাকার নোট  ১৫০ টাকা, ৫০ টাকার নোট ১০০ টাকা, ১০০ টাকার নোট ৮০ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে।

বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন জমির আমিন। ২০ টাকার নোটের বান্ডিল নেড়েচেড়ে দেখছিলেন তিনি। বিক্রেতার সঙ্গে কথাবার্তা বলে ৩০০ টাকায় দুই বান্ডিল কিনে নিলেন। জমির আমিন বলেন, ‘বাড়িতে যাবো। বাচ্চাদের হাতে নতুন টাকা দিলে ওরা একটু খুশি হয়। এটাই আমার আনন্দ।’

পোশাকশ্রমিক হাসিবুলও ভাতিজা-ভাগ্নেদের ঈদের সালামি দিতে নতুন টাকার জন্য এসেছেন নিউ মার্কেট এলাকায়। ফটিকছড়ির এই যুবক বলেন, ‘ব্যাংকে গেলেও টাকা দেয় না জানি। তাই এখান থেকেই টাকা কিনতে এসেছি। বিয়ে করিনি, ভাতিজা, ভাগ্নে আছে। ওদের খুশি করবো।’

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সাফায়েত বলেন, ‘বাড়ি যাওয়ার আগে মা বলছেন নতুন টাকা নিতে বেশ কয়েক জায়গায় খোঁজ নিয়েছি, পাইনি। তাই নিউমার্কেট এসেছি। তবে ঈদের সময় তো নকল টাকার ছড়াছড়ি তাই এখন সিদ্ধান্তহীনতায় আছি-এই টাকা নিবো কিনা।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *