জাতীয়

ভোট চুরির অপরাধে খালেদা জিয়াকে বিদায় নিতে হয়েছিল : প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খালেদা জিয়াকে ভোট চুরির অপরাধে বিদায় নিতে হয়েছিল। এক বার নয়, দুই বার বিদায় নিতে হয়েছিল।

তিনি বলেন, ২০০১ সালে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। আমি বলেছিলাম গ্যাস পাবে না। আল্লাহ-তায়ালাও যখন সম্পদ দেয়, মানুষ বুঝে দেয়। সেই গ্যাস দিতে পারেনি। কূপ খনন করে দেখে গ্যাস নাই।

বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‌স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মাত্র তিন বছর সাত মাস সময় পান। এর মধ্যেই দেশটাকে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলেন। স্বল্পোন্নত দেশের স্বীকৃতি জাতিসংঘ কর্তৃক আদায় করেন। এত অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের উন্নতিটা আমাদের স্বাধীনতা বিরোধীরা ভাবতেও পারেনি। যারা বলেছিল বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে কী হবে, এটা তো বটমলেস বাস্কেট হবে, তারা এই উন্নয়নটাকে মেনে নিতে পারেনি। একটা দেশ এত দ্রুত অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাবে, প্রবৃদ্ধি ৯ ভাগের ওপর উঠতে পারে, এটা তাদের ধারণার বাইরে ছিল। চক্রান্ত করে ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া ৯৬ সালে এক ভোটারবিহীন নির্বাচন করে, কর্নেল রশিদ ও হুদাকে ভোট চুরি করে ক্ষমতা বসালো। পার্লামেন্টে বিরোধী দলের নেতার আসন দিলো। ফারুককেও চেষ্টা করেছিল নওগাঁ থেকে জিতিয়ে আনতে, সেটা পারে নাই। তিনি (খালেদা) ঘোষণা দিলেন যে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। বেশি দিন বসতে পারেনি, ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন, ৩০ মার্চ জনগণের রুদ্ররসে খালেদা জিয়াকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল। নাকে খত দিয়ে পদত্যাগ করে বিদায় নিয়েছিল।

তিনি বলেন, আজকে মানুষ বিদেশে গেলে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে সম্মান পায়। আর এই সম্মানটা দিতে পারে না আমাদের দেশের কিছু কুলাঙ্গার। ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় হানাদা বাহিনীর দোসর যারা ছিল, এরাই তাদের প্রেতাত্মা হয়ে দেশের মানুষের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে হত্যা করে যাচ্ছে। হত্যার পরিকল্পনা করছে।

জনগণের কাছে আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যেখানে বাস আছে, রেললাইন আছে, যেখানে এরকম (রেলপথ তুলে ফেলা) ঘটনা ঘটবে, সাথে সাথে জনগণ যদি মাঠে নামে এরা হালে পানি পাবে না। এরা ধ্বংস করতে পারে, এরা মানুষের জন্য সৃষ্টিকর্তা পারে না। এরা মানুষকে খুন করতে পারে, কিন্তু মানুষের জীবনের শান্তি নিরাপত্তা দিতে পারে না। এরা মানুষের সর্বনাশ করতে পারে, মানুষের জীবনটা উন্নত করতে পারে না। কাজে তাদের কাছ থেকে সাবধান। আর কোথাও যদি এই ধরনের রেলের স্লিপ তুলে ফেলে, আগুন দেয়, যখনই করতে যাবে সরাসরি তাদের ধরতে হবে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

রেল লাইন থেকে বগি ফেলে দিয়ে মানুষ হত্যা করবে, এরা আবার গণতন্ত্রের কথা বলে কোন মুখে? হত্যাকারীরা কখনো গণতন্ত্র দিতে পারে না। এটা দেশের মানুষকে বুঝতে হবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, যারা জ্বালাপোড়া করে, রেল লাইনের স্লিপার তুলে ফেলে, এরা তো পরাজিত শক্তির দালাল। পরাজিত শক্তির দোসর। এদের না বলুন। এদের বাংলাদেশের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নাই। খুনি, সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতিবাজদের বাংলাদেশে কোনো স্থান নাই। বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ, বাংলাদেশের মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটের অধিকার ফিরে পেয়েছে, তারা ভোটের অধিকার প্রয়োগ করবে। শান্তিতে বাস করবে, উন্নত জীবন পাবে— সেটাই আমাদের লক্ষ্য।

আওয়ামী লীগ সভাপতির সভাপতিত্বে স্মরণসভায় দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *