বিনোদনরাজনীতি

মনোনয়ন না পেয়ে হতাশ হয়ে নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছেন তারকারা

৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের প্রচার প্রচারণায় একঝাঁক তারকাদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছিল। সেই তারকারা বিভিন্ন প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিভিন্ন জনসভায় বক্তব্য রেখেছিলেন। নির্বাচনী আমেজ আনার ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা ছিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আর সে কারণেই অনেকে মনে করেছিলেন, এবার সংরক্ষিত আসনে বোধহয় শোবিজের তারকাদের অনেকেই মনোনয়ন পাবেন। কিন্তু সবাইকে হতাশ করে দিয়ে শেষ পর্যন্ত শোবিজ তারকারা কেউই মনোনয়ন পাননি। একমাত্র তারানা হালিম সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন। কিন্তু কোনভাবেই তিনি শোবিজ তারকা হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন বলে মনে করার কোন কারণ নেই। কারণ তিনি একজন পরীক্ষিত রাজনীতিবিদ হিসেবেই বেড়ে উঠেছেন এবং রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে থাকার কারণে তিনি সংরক্ষিত কোটায় এমপি হতে পেরেছেন বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।

এরকম বাস্তবতার যে সমস্ত শোবিজের তারকারা গত প্রায় এক বছর ধরে আওয়ামী লীগের ঝান্ডা উড়িয়েছিলেন, আওয়ামী লীগের চেয়েও বেশি আওয়ামী লীগ হিসেবে নিজেদেরকে প্রমাণের চেষ্টা করেছিলেন, অনেক ক্ষেত্রে যারা রাজনীতিবিদদের চেয়েও বড় বড় বক্তৃতা বিবৃতি দিচ্ছিলেন তাদেরকে এখন হতাশ দেখা যাচ্ছে। গত দুই বছরে এই সমস্ত শোবিজের তারকারা বিভিন্ন মানববন্ধনে, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, বিভিন্ন মন্ত্রীদের আলোচনা অনুষ্ঠানে সরব উপস্থিত ছিলেন। আওয়ামী লীগের যে কোনো কর্মসূচি মানেই এ সমস্ত শোবিজের তারকাদের সরব উপস্থিতি। আর মিডিয়ার আনুকূল্যে তাদের উপস্থিতিকে জানান দেওয়া হতো খুব সহজেই। এরাই ভবিষ্যতে মন্ত্রী এমপি হতে যাচ্ছেন এমন ভাবনা ছিল বিভিন্ন জায়গায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সভাপতি সংরক্ষিত কোটায় সংসদ সদস্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছে এবং সচেতন ভাবে তিনি তারকাদেরকে আর নেননি। কিন্তু এই না নেওয়ার ফলে তারকা জগতে যেন হতাশার শশ্মান নেমে এসেছে। তারা এখন সরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেতে অনাগ্রহী হচ্ছেন। কেউ কেউ রাজনীতি থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়ে নিজেদের ব্যবসা বাণিজ্য বা অভিনয়শিল্পের দিকে মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। দু একজনকে কিছু কিছু অনুষ্ঠানে দেখা গেলেও অধিকাংশরাই মন্ত্রীদের আমন্ত্রণে কোন অনুষ্ঠানে যেতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তাদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করছেন যে, দুই বছর ধরে এত পরিশ্রম করার পর তারা কি পেলেন?

অনেক তারকাই মনে করেন যে, তাদের মনোনয়ন পাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা কেন মনোনয়ন পাননি, তা নিয়ে তাদের মধ্যে নানারকম প্রশ্ন এবং হতাশা দেখা দিয়েছে। এরকম বাস্তবতায় তারকাদের কেউ কেউ আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক গুটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। আগে যাদেরকে বিভিন্ন মন্ত্রীদের দপ্তরে বা মন্ত্রীদের বাসায় দেখা যেত তারা এখন সে পথ মারাচ্ছেন না। বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে যারা বেশ সপ্রতিভ ভাবে উপস্থিত হতেন তারাও এখন আসছেন না। তাহলে কি আওয়ামী লীগের সঙ্গে তারকাদের সম্পর্কের ইতি ঘটলো?

তবে বিশ্লেষকরা তা মনে করেন না। তারা মনে করেন যে, আওয়ামী লীগ যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন ক্ষমতাকেন্দ্রে নানা রকম সুযোগ সুবিধা নেওয়ার জন্য অনেকে চারপাশে ঘুরাফেরা করবে। তাদের মধ্যে এক ধরনের হতাশ তৈরি হয়েছে এটি সত্যি কিন্তু এই হতাশা থেকে তারা নগদ প্রাপ্তির আশা ছাড়বেন না। আর এই প্রত্যাশার প্রাপ্তির জন্য তারা সাময়িক হতাশা কাটিয়ে আবার ক্ষমতা কেন্দ্রের চারপাশে ঘুরাফেরা শুরু করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *