দেশজুড়ে

রাসেল’স ভাইপারে দংশিত রোগী অ্যান্টিভেনম প্রয়োগে সুস্থ

মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাসেল’স ভাইপার সাপের কামড়ে আক্রান্ত এক রোগী অ্যান্টিভেনম প্রয়োগের ফলে সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

গত ১ জুলাই উপজেলার পদ্মাবেষ্টিত চরজানাজাত ইউনিয়নে পাট জাগ দিতে গিয়ে সুলতান বেপারী (৫২) নামের এক কৃষক সাপের কামড়ে আক্রান্ত হন। এসময় স্থানীয়রা সাপটি রাসেল’স ভাইপার বলে শনাক্ত করেন।

শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কৃষক সুলতান বেপারী জমির পাট কেটে পাশের পদ্মা নদীতে জাগ দিতে যান। পানিতে নামতেই রাসেলস ভাইপার ছোবল মারে। সাথে সাথেই স্থানীয়রা আক্রান্ত ব্যক্তিকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। পরে চিকিৎসকেরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ‘বিষধর’ সাপের কামড় বলে নিশ্চিত হন। এরপর তাৎক্ষণিক মেডিকেল বোর্ড গঠন করে তার চিকিৎসা শুরু করেন চিকিৎসকেরা। অ্যান্টিভেনম প্রয়োগের পর রোগী সুস্থ হয়ে ওঠে।

অ্যান্টিভেনম প্রয়োগের পর সুস্থ হয়ে ওঠা সুলতান বেপারী উপজেলার চর জানাজাত ইউনিয়নের রশিদ মোল্লারকান্দি গ্রামের মৃত কাশেম বেপারীর ছেলে।

সুলতান বেপারী বলেন,পদ্মার চরে রাসেলস ভাইপারের উপদ্রব বেড়েছে। সতর্ক থেকে কাজ করার পরও সাপের কামড়ের শিকার হই। পাট জাগ দেওয়ার সময় হাতে সাপটি কামড় দেয়। আমি চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে হাতের বিভিন্ন স্থানে তিনটি বাঁধ দেয়। পরে হাসপাতালে নিয়ে আসে। এখানে চিকিৎসা দেওয়ার পর এখন আমি আল্লাহর রহমতে সুস্থ।

শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মো. ইব্রাহিম হোসেন জানান, সোমবার দুপুরে ওই রোগী হাসপাতালে আসেন। তখন রোগী খুবই অসুস্থ ছিলেন। আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বুঝতে পারি বিষধর সাপে তাকে কামড় দিয়েছে। তাছাড়া রোগী নিজেই সাপটি দেখেছেন এবং সাপটি রাসেলস ভাইপার বলে জানান তিনি। এরপর মেডিকেল বোর্ড গঠন করে রোগীকে অ্যান্টিভেনম দিই। এবং পর্যবেক্ষণে রাখি। অ্যান্টিভেনম দেওয়ার ৩/৪ ঘণ্টা পর রোগী ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন।

তিনি আরও বলেন, সাপের কামড়ের পর ওঝার কাছে ঝাড়-ফুঁকের জন্য গিয়ে সময় নষ্ট করবেন না। যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ যে কোরো সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসবেন। শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এর আগেও বেশ কয়েকজন সাপে কাটা রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.ফাতিমা মাহজাবিন বলেন, আমরা বুধবার সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় সাপের কামড়ে আহত ওই রোগীকে ছাড়পত্র দিয়েছি। আগামী শনিবার ফলোআপের জন্য তাকে আসতে বলা হয়েছে। আমাদের হাসপাতালে অ্যান্টিভেনম রয়েছে। শেষ হওয়ার আগেই আমরা চাহিদা দিয়ে থাকি। সাপের কামড়ে আক্রান্তদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে এলে যথাযথ চিকিৎসার মধ্য দিয়ে সুস্থ করে তোলা সম্ভব বলে মনে করি। তাছাড়া আমরা রোগীর অবস্থা খুব বেশি খারাপ না হলে অন্যত্র পাঠাই না। এখানেই সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *