চট্টগ্রাম

শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলার কোন বিকল্প নেই

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার (সিজেকেএস) সভাপতি আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেছেন, আমাদের দেশে ফুটবল ও ক্রিকেট খেলা খুবই জনপ্রিয় হলেও ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস, ভলিবল ও দাবা খেলার জনপ্রিয়তার কমতি নেই। শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলার কোন বিকল্প নেই। এ লক্ষ্যে চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলার ১৯১টি ইউনিয়নে খেলার মাঠ তৈরির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মাঠগুলো পুরোপুরি খেলার উপযোগী হয়ে গেলে তৃণমূল থেকে আমরা খেলোয়াড় তৈরি করতে পারব এবং তাদের মাধ্যমে সব ধরনের খেলা উপজেলা ও জেলা হয়ে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে পারবো। এজন্য রমজান পরবর্তী প্রত্যেক স্কুল-কলেজে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে কমপক্ষে ২টি খেলায় অংশ নিতে হবে। আজ ১২ মার্চ মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত খেলাধুলার মানোন্নয়ন ও প্রসারে সকল উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, মান ও দক্ষতা সম্পন্ন খেলোয়াড় তৈরি করার জন্য আন্তঃওয়ার্ড, আন্তঃইউনিয়ন, পৌর ও উপজেলা ভিত্তিক খেলাধুলার পাশাপাশি আন্তঃস্কুল-আন্তঃকলেজ পর্যায়ে বছরে ৮টি না হলেও কমপক্ষে ৪টি ইভেন্টে খেলাধুলার আয়োজন করতে হবে। আমরা এ ব্যাপারে একটি ক্যালেন্ডার করবো। বঙ্গবন্ধু বঙ্গমাতা শেখ কামাল গোল্ডকাপ ফুটবল, ক্রিকেট ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস, ভলিবল ও দাবা টুর্নামেন্টের পাশাপাশি বিভাগীয় কমিশনার কাপ, জেলা প্রশাসক কাপ, মেয়র কাপ বা এলাকার গুণী ব্যক্তিদের নামে খেলাধুলার আয়োজন করতে হবে। সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাথে সম্পৃক্ত রাখতে হবে। প্রত্যেক উপজেলায় একটি ক্রীড়া সংস্থার কার্যালয় ও শিল্পকলার জন্য একটি করে রুম রাখার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণকে নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক।

সিজেকেএস সভাপতি বলেন, ফান্ড বাড়লে খেলাধুলার মান বৃদ্ধি পাবে। এজন্য উপজেলা পর্যায়ে পূর্বের একাউন্ট বন্ধ করে দিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক মিলে যৌথ ব্যাংক একাউন্ট করতে হবে। খেলাধুলার মানোন্নয়নে এডিপি, টিআর, কাবিখা ও জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার ধণাঢ্য ব্যক্তিদের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার ফান্ড বৃদ্ধি করা যেতে পারে। প্রত্যেক উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতিকে জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাউন্সিলর করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাব প্রেরণের তাগিদ দেন তিনি।

সভায় সিজেকেএস সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দিন বলেন, সুস্থ সবল জাতি গঠনে খেলাধুলার গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের ছেলে-মেয়েরা পড়ালেখার নামে কোথায় যাচ্ছে, কার সাথে মিশছে, কোন পরিবেশে মিশছে তা প্রত্যেক অভিভাবককে খোঁজ-খবর রাখতে হবে। মাদক ও অন্যান্য অপকর্ম থেকে দূরে রাখতে সন্তানদেরকে পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন খেলাধুলায় পারদর্শী করে তুলতে হবে। ক্রীড়াঙ্গনকে যত বেশি সক্রিয় ও সমৃদ্ধ করতে পারব ততই ভবিষ্যৎ প্রজন্ম অনৈতিক ও অপকর্ম থেকে বিরত থাকবে। জিরো থেকে শুরু করলে আমরা ভালো করতে পারবো।

তিনি বলে, শুধু টুর্নামেন্টে অংশ নিলে হবে না, নিয়মিত খেলাধুলা করতে হবে। উপজেলা পর্যায় থেকে যে সকল খেলোয়াড় উঠে আসবে তাদেরকে আমরা সিজেকেএস-এ খেলার সুযোগ সৃষ্টি করে দেব। উপজেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিতব্য ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় আর্থিক অনুদানের ঘোষণা দেন আ.জ.ম নাছির।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার (সিজেকেএস) সভাপতি আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আবদুল মালেক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সাদি-উর রহিম জাদিদ ও সিজেকেএস যুগ্ম সম্পাদক অহিদ সিরাজ চৌধুরী স্বপনসহ প্রত্যেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সিজেকেএস সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *