চট্টগ্রামরাউজান

সর্বজনীন পেনশন স্কিম রেজিস্ট্রেশনে সেরা রাউজান

সর্বজনীন পেনশন স্কিমে চট্টগ্রামের ৩০টি থানা এবং ১৫টি উপজেলা মিলে সবচেয়ে বেশি রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছে রাউজান উপজেলায়। এ পর্যন্ত ৪ হাজার ১৫০ জনের পেনশন স্কিম রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে।

উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় বেসরকারি চাকরিজীবী, ইমাম, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, মধ্যবিত্ত শ্রেণী, মৎস্যজীবী, পরিবহন শ্রমিক থেকে শুরু করে দিনমজুর পর্যন্ত পেনশন স্কিমের আওতায় আসতে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করছেন।

উপজেলা প্রশাসন জনসাধারণ ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজনকে নিয়ে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের নানাবিধ উপকারিতা জানাতে ১৪টি ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায়ে অবহিতকরণ সভা করে উপজেলা প্রশাসন।

মাইকিং, লিফলেট বিতরণ, ইমাম সমাবেশ, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারগুলোতে সর্বজনীন পেনশন স্কিম হেল্প ডেক্স স্থাপন, সকল ইউনিয়ন ভূমি অফিসে হেল্প ডেক্স স্থাপন এবং বিভিন্ন গ্রোথ সেন্টারে স্পট রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রমের মাধ্যমে এটি বেগবান করেন উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। সেইসঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে যারা রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রমে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন তাদেরকে উপজেলা সমন্বয় সভায় পুরস্কার প্রদান করার মাধ্যমে উৎসাহিত করা হয়েছে।
রাউজানের সংসদ সদস্য ও রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী সর্বজনীন পেনশন স্কিম রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম বেগবান করতে পৌরসভার মেয়র ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দিয়েছেন এবং বিভিন্ন অবহিতকরণ সভায় বক্তব্য দিয়ে জনসাধারণকে অনুপ্রাণিত করেছেন। স্থানীয় পৌরসভার মেয়র ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানরা স্থানীয়ভাবে মাইকিং, অবহিতকরণ সভা ও লিফলেট বিতরণ করে জনসাধারণকে এই বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অংগ্যজাই মারমা বলেন, রাউজানে সর্বজনীন পেনশন স্কিন রেজিস্ট্রেশনে যে সাড়া পাওয়া গেছে, সেটি উৎসাহব্যঞ্জক। এই পর্যন্ত আমরা ৪ হাজার ১৫০ জন পেনশনারের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছি। সামনের দিনগুলোয় সর্বজনীন পেনশনে আগ্রহী মানুষের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা করছি। আমরা এই কার্যক্রমকে সফল করতে ইউনিয়নভিত্তিক ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করেছি। মাসিক ও বাৎসরিক কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা উপজেলা পর্যায়ে এই বিষয়ক সকল কার্যক্রম আমার সঙ্গে সমন্বয় করছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এই কাজে সর্বাত্মভাবে সহযোগিতা করছেন।

জানা গেছে, চট্টগ্রামে সর্বজনীন পেনশনে স্কিমে এ পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন সম্পন করেছে আকবরশাহ থানায় ৬৩জন, আনোয়ারায় ২৪৫৫ জন, ইপিজেড থানায় ৩৫জন, কর্ণফুলী উপজেলায় ২০৬২ জন, কতোয়ালী থানায় ১৭৬ জন, খুলশী থানায় ৭৭ জন, চকাবাজার থানায় ৩৩ জন, চন্দনাইশ উপজেলায় ২৭২৯ জন, চান্দগাও থানায় ১০৫ জন, ডবলমুরিং থানায় ৭৯ জন, পটিয়া উপজেলায় ২৩৩৭ জন, পতেঙ্গা থানায় ৩০ জন, পাঁচলাইশে ৫৯ জন, পাহাড়তলীতে ৪৪ জন, বন্দরে ৪৭ জন, বাকলিয়া ৪৪ জন, বায়েজিদ বোস্তামী থানায় ৫৩ জন, সদরঘাট থানায় ২১ জন, ফটিকছড়ি উপজেলায় ২৩৬২ জন, বাঁশখালীতে ২৮৫৪ জন, বোয়ালখালী উপজেলায় ২০২৪ জন, মিরসরাইয় উপজেলায় ১৯৬২ জন, রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় ১৩৫৭ জন, লোহাগাড়া উপজেলায় ১৬৩৭ জন, সন্দ্বীপে ১৪১৯ জন, সাতকানিয়া উপজেলায় ১৯৭৫জন, সীতাকুন্ড উপজেলায় ৩৮১৬ জন, হাটহাজারী উপজেলায় ১৩৬৩জন, হালিশহর থানায় ৬৪ জনসহ মোট ৩৫ হাজার ৪৭১ জন রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছেন।

দেশের জনগণের গড় আয়ু বৃদ্ধির কারণে ক্রমবর্ধমান বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে টেকসই ও সুসংগঠিত সমাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতাভুক্ত করার লক্ষ্যে এবং ভবিষ্যতে কর্মক্ষম জনসংখ্যা হ্রাসের কারণে নির্ভশীলতার হার বৃদ্ধি পাবে বিবেচনায় নিয়ে জাতীয় সংসদে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩’ পাস করা হয়েছে। ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভের পর আইনটি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে। এ আইনের আলোকে গঠিত জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *