সাড়ে ৮ কোটি টাকার ব্রিজ এখন বাস স্ট্যান্ড!
৮ কোটি ৬৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ৭০ মিটার দীর্ঘ জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো–অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) সিটি গভর্নেন্স প্রজক্ট ব্যাচ-২ এর আওতায় ২০২১ সালে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শেষ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ।
২০২২ সালের জানুয়ারিতে ব্রিজটি বুঝিয়ে দেয়া হয় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে (চসিক)। এরপর দুই বছর পার হলেও ব্রিজটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়নি চসিক।
দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজটি যান চলাচলের জন্য খুলে না দেয়ার কারণ হিসেবে চসিকের দায়িত্বশীল প্রকৌশলীরা বলছেন, জাইকার বরাদ্দ শেষ হওয়ায় ব্রিজটির অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। তাই সেটা যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ সুযোগে অবৈধভাবে সেখানে বাস রাখছেন চালক–মালিকরা। তবে এটা কোনো বাস স্ট্যান্ড নয়।
শহীদ নামে এক ক্রেতা বলেন, ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে দুই তিন বছর হবে। এত দীর্ঘ সময় পেরুলেও কেন যান চলাচলের জন্য খুলে দিচ্ছে না বুঝতে পারছি না। খুলেই যদি না দেয় তাহলে সাড়ে ৮ কোটি টাকাই বা খরচ করল কেন।
এসময় নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বাসচালক বলেন, এত সুন্দর একটি ব্রিজে বাস রাখছি আমাদেরও খারাপ লাগছে। তবে এটাও ঠিক খালি পড়ে আছে বলেই রাখছি। আমরাও চাই যান চলাচলের জন্য ব্রিজটি খুলে দেয়া হোক।
চসিকের ফিরিঙ্গি বাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব বলেন, ব্রিজটি আমার ওয়ার্ডে পড়েনি। তবে এটা অচিরেই খুলে দেয়া উচিত। বিপুল অংকের টাকা খরচেরও পরও কেন ব্যবহার হবে না। অ্যাপ্রোচ রোডের কাজ শেষ করা উচিত।
চসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফরহাদুল আলম বলেন, ব্রিজটি ব্যবহারের জন্য আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি। কোভিড ফান্ড থেকে অ্যাপ্রোচ রোড করা হবে। সেজন্য প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। ২০২৪ সালের মধ্যে অ্যাপ্রোচ রোড করে ব্রিজটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে।
জানা গেছে, নগরের ফিরিঙ্গিবাজারের ব্রিজঘাট এলাকা থেকে কর্ণফুলী সেতুর বশিরুজ্জামান চত্বর পর্যন্ত সড়কটিই মেরিনার্স রোড। নগর থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রামমুখী কয়েক লক্ষ লোক প্রতিদিন এ সড়কটি ব্যবহার করেন। প্রতিদিন টেঙি, টেম্পো, রিকশা, প্রাইভেট কার, মিনি ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের যান চলাচল করে মেরিনার্স সড়ক দিয়ে। ২৫ কোটি টাকায় ২০১৪ সালে দুই লেইনের এ সড়কটি নির্মাণ করে চসিক। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে তা চার লেনে উন্নীত করা হয়। ওই সময় রাজাখালী খালের উপর একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে যানবাহন ব্রিজটি দিয়ে চলাচল করে। জাইকার অর্থায়নে নির্মিত ব্রিজটি পূর্বে নির্মিত ব্রিজের পাশেই।