ধর্ম

সুলাইমান আ.-কে যে বিস্ময়কর রাজত্ব দিয়েছিলেন আল্লাহ

হজরত সুলাইমান আ. নবী দাউদ আ.-এর সন্তান ছিলেন। দাউদ আ. শাম, ইরাক, ফিলিস্তিন এবং পূর্ব জর্দানের সমগ্র এলাকার শাসক ছিলেন। নবী দাউদ আ.-এর ইন্তেকালের পর তাঁরই পুত্র সুলাইমান আ. ওই সাম্রাজ্যের দায়িত্ব লাভ করেন। তাঁর রাজত্বকাল ৯৫০ খ্রিস্টপূর্ব ছিল বলে মনে করা হয়। পিতা দাউদ আ.-এর সাম্রাজ্যের সীমানা তিনি আরও বিস্তৃত করেন।

পবিত্র কোরআনে তাঁর বিশাল সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি উল্লেখ করতে ‘মাশারিকাল আরদ ওয়া মাগারিবিহা’ তথা পৃথিবীর পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল বোঝানো হয়েছে।

সুলাইমান আ.-এর অধীন ভূমিকে বরকতময় অঞ্চল হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ব্যাখ্যাকাররা তা শামের (সিরিয়া) পবিত্র ভূমি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

সুলাইমান আ. তার বিস্তৃত সাম্রাজ্যে ৪০ বছর রাজত্ব করেন। তাঁর সাম্র্রাজ্যকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সাম্র্রাজ্য হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। মানব, দানব, জিন, পশু-পাখি সব কিছুর ওপর তাঁর আধিপত্য ছিল। (সুরা নামল, আয়াত : ১৭; সুরা ছোয়াদ, আয়াত : ৩৭-৩৮)।

জিনদের সাহায্যে তিনি অসাধারণ শিল্পকর্ম ও স্থাপত্যের উদ্ভাবন করেন। (সুরা সাবা, আয়াত : ১২-১৩) আল্লাহর নির্দেশে বাতাস তাঁর বশীভূত ছিল। (সুরা আম্বিয়া, আয়াত : ৮১)

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তিনি জিনদের সাহায্যে বিরাট বিরাট স্থাপত্য কর্ম গড়ে তুলেছিলেন। লৌহের পাশাপাশি তিনি তামাকে শিল্পকর্মে ব্যবহার করতেন। পিতা দাউদকে (আ.) লৌহ গলানোর মুজিজা ও পুত্র সুলাইমানকে তামা গলিয়ে ধাতু তৈরির মুজিজা প্রদান করা হয়। (তাফসিরে কুরতুবি)

এত বিশাল ক্ষমতা ও প্রাচুর্যপূর্ণ সাম্রাজ্যের অধিপতি হয়েও তিনি রাজকোষ থেকে কোনো ভাতা-বেতন গ্রহণ করতেন না। টুকরি বানিয়ে তা বিক্রি করে তার উপার্জন দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করতেন। তাঁর রাজ্যের ন্যায়বিচার লোককথা হয়ে সারা দুনিয়ায় আজও মানুষের মুখে মুখে চর্চিত হয়। জিনদের মাধ্যমে বায়তুল মুকাদ্দাস নির্মাণ তাঁর অমর কীর্তি। (সুরা সাবা, আয়াত : ১৪)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *