খেলা

১২ সোনা আর ৬ জাতীয় রেকর্ড গড়েও সন্তুষ্ট নন এ্যানি

এ্যানি আক্তার সন্তুষ্ট নন। তাঁর অসন্তুষ্টি টাইমিং নিয়ে। অথচ সাইফ পাওয়ারটেক ৩৬তম জাতীয় বয়সভিত্তিক সাঁতারে এই মেয়েটিই ১২টি সোনার পদক জিতেছেন, গড়েছেন ৬টি নতুন জাতীয় রেকর্ড।

কুষ্টিয়ার আমলা থেকে উঠে আসা সাঁতারু এ্যানি। দেশের সাঁতারু তৈরির কারখানাই বলা যায় কুষ্টিয়ার এই গ্রামটিকে। আমলার খালে, মজা পুকুরে কতশত সাঁতারুর জন্ম হয়। এই গ্রাম থেকে জাতীয় পর্যায়ে উঠে আসা সাঁতারুর সংখ্যা কম নয়। রুবেল রানা, অনীক ইসলাম, আসিফ রেজা, নাজমা খাতুন, সীমা খাতুন, সুবর্ণা খাতুন, ‘জলকন্যা’খ্যাত সবুরা খাতুন, লাবণি আক্তার, ববিতা খাতুনসহ আরও অনেকেই আছেন। সেই গ্রামের মেয়ে এ্যানি এবার বয়সভিত্তিক সাঁতারের সেরা সাঁতারু। ১২টি সোনার পদক জেতা আর ৬টি নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়া কম কথা নয়।

কিন্তু এ্যানি সন্তুষ্ট নন কেন। তাঁর কথা, ‘আমি যে টাইমিং করেছি, সেটাতে একটু হলেও ফাঁক আছে। টাইমিংটা যদি ইলেকট্রনিক হতো, তাহলে নিজের সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যেত। তবে আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি। টাইমিংয়ের হিসাব যেভাবেই হোক, আরও ভালো করতে চাই।’

২০১৯ সালে মারা যান তাঁর বাবা মোহাম্মদ ইকরাম। কৃষিকাজ করতেন। নিজেদের কোনো জমিজমা নেই। অন্যের জমিতেই চাষ করে সংসার চালাতেন। বাবা মারা যাওয়ার পর এ্যানিদের পরিবার গভীর আর্থিক সংকটে পড়ে যায়। পরিবারে রোজগার করার মতো কেউ নেই, মা বিলকিস খাতুন চোখে অন্ধকার দেখছিলেন। তবে এই বিপদের সময় এগিয়ে আসেন এ্যানির মামা। এখন তিনিই এ্যানিদের সংসার চালান। তবে এ্যানির স্বপ্ন বড় সাঁতারু হওয়াই, ‘মা, মামা দুজনই আমাকে খুব উৎসাহ দেন। তাঁরা চান, আমি যেন খুব ভালো সাঁতারু হতে পারি।’

সাঁতার নিয়ে এ্যানি নিজের স্বপ্নের কথাও জানিয়েছেন, ‘আমার স্বপ্ন অনেক বড়। আপাতত এসএ গেমসে কিছু করতে চাই। এরপর এশিয়ান গেমস। তবে এ জন্য আমাকে অনেক পরিশ্রম করতে হবে, সেটা জানি।’

এ্যানি এর আগেও সেরা সাঁতারু হয়েছিলেন দুবার। ২০১৯ ও ২০২২ সালের পর এবারও হলেন বয়সভিত্তিক সাঁতারের সেরা। সাঁতারের কাছে তাঁর আলাদা করে কোনো চাওয়া নেই। একটা জিনিসই চান, সেটি প্রশিক্ষণ, ‘সাঁতারে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভালো করতে যে প্রশিক্ষণ দরকার, সেটি আমাদের দেশে নেই। আমাদের কোচরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেই আমাদের গড়ে তোলেন। তবে আরও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা প্রয়োজন। আমি দেশের সাঁতার কর্তৃপক্ষের কাছে শুধু উন্নত মানের প্রশিক্ষণ সুবিধাই চাই।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *