অঘটন আর ইতিহাস গড়ে এশিয়ান কাপের ফাইনালে জর্ডান
এক কথায় অবিশ্বাস্য, অসাধারণ। এএফসি এশিয়ান কাপে চলতি আসরে সবচেয়ে বড় অঘটন বললেও বলা যেতে পারে। টুর্নামেন্টের হট ফেবারিট দক্ষিণ কোরিয়াকে বিদায় করে দিয়েছে আসরের ডার্কহর্স জর্ডান। আগে কখনো কোয়ার্টার ফাইনাল পেরুতে না পারা দলটিই এবার চলে গেল ফাইনালে। সেটাও দক্ষিণ কোরিয়ার মত দলকে হারিয়ে। আর এরই সঙ্গে ১৯৬০ সালের পর থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার এশিয়ান সাফল্য অর্জনের অপেক্ষা আরও বড় হয়েছে।
প্রতিপক্ষ দলে আছেন সময়ের অন্যতম সেরা তারকা হিউয়েং মিন সন। আক্রমণভাগের তিনজনই ইউরোপের নামী ক্লাবে খেলে অভ্যস্ত। দুজন প্রিমিয়ার লিগে। অন্যজন পিএসজির তারকা। মূল দলের ৫ জন খেলছেন ইউরোপের বিভিন্ন লিগে। এসব যেন পাত্তাই পেল না কাল জর্ডানের সামনে। কিকঅফের পর মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মাথায় দক্ষিণ কোরিয়ার বক্সে হাজির হয় তারা। এরপর প্রথম চার মিনিটেই চলে ক্ষুরধার আক্রমণ।
দূরপাল্লার শটে দক্ষিণ কোরিয়ার ডিফেন্সে বারবার কাঁপন ধরিয়েছেন জর্ডানের অ্যাটাকাররা। দক্ষিণ কোরিয়া কিংবা মাঠের উপস্থিত দর্শকরা যতক্ষণে খানিক স্থির হয়েছেন, ততক্ষণে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ আরব দেশটির হাতে। এরপরেও অবশ্য ম্যাচের প্রথমার্ধের সবচেয়ে বড় দুই সুযোগ পেয়েছে কোরিয়া।
১৮ মিনিটে সন গোল করলেন দারুণ এক চিপ থেকে। কিন্তু অফসাইডের কারণে কাঁটা পড়ে সেই গোল। এরপর আবারও দক্ষিণ কোরিয়ার ওপর চড়াও হয় জর্ডান। তবে কখনো ভাগ্য, আবার কখনো গোলরক্ষক তাদের হতাশ করেছেন। আর ৩২ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে গোলপোস্টে আঘাত করে কোরিয়া।
দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য আর লাগাম হারায়নি জর্ডান। শুরু থেকেই তারা সম্পূর্ণ ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ছিল তাদের কাছে। ফলাফল আসে ৫৪ মিনিটে। দক্ষিণ কোরিয়ার ভুলের সুযোগ নিয়ে দারুণ ফিনিশিংয়ে লক্ষ্যভেদ করেন আল–নিয়ামাত। তার ছোট চিপ ঠেকাবার কোনো সুযোগই ছিল না দক্ষিণ কোরিয়া গোলরক্ষকের।
কাঁটায় কাঁটায় ১২ মিনিট পর আবার আঘাত হানে জর্ডান। মুসা আল–তামারির ডিবক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট জড়ায় দক্ষিণ কোরিয়ার জালে। ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়া কোরিয়ার কাছে ম্যাচ তখনই কার্যত শেষ। আগের ৬ দেখায় কখনোই জর্ডান হারাতে পারেনি তাদের। এবার এশিয়ান ফুটবলের সবচেয়ে বড় মঞ্চেই যেন নিজেদের শক্তি দেখাল তারা। ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ হবে ইরান এবং কাতার ম্যাচের জয়ী দল।