বিনোদন

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ইলিয়াস কাঞ্চনের প্রত্যাশা

কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্র-জনতার তোপের মুখে (৫ আগস্ট) দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। দেশ পরিচালনায় ( ৮ আগস্ট) অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। নতুন এই সরকারের কাছে প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন জনপ্রিয় নায়ক ও ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ (নিসচা) সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস কাঞ্চন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছিলেন এই অভিনেতা। সড়কেও নেমেছিলেন তিনি। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলন থেকে আসা নতুন এই সরকারকে ধৈর্য ও চিন্তা নিয়ে কাজ করতে হবে। অন্যরা হুট করে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারলেও এই সরকার পারবে না। কৌশল অবলম্বন করতে হবে।

ব্যক্তিগতভাবে আমার চাওয়া সড়কের শৃঙ্খলা ফেরানো। এই অঙ্গনে কিছু ভালো মানুষও তো আছেন। তাদের এক করতে হবে। তাদের নেতৃত্বে আনতে হবে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনিসুল হক র‌্যাপিড ট্রানজিট বাস চালু করতে চেয়েছিলেন। এটাকে যেন দ্রুত বাস্তবায়ন করা হয়। তাহলে বাসগুলোর দৌরাত্ম্য বন্ধ হবে। সারা পৃথিবীতে গণপরিবহন থাকে সরকারের অধীনে। ব্যক্তি মালিকানায় রেখে গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরানো যাবে না।’

ইলিয়াস কাঞ্চন তিন দশক ধরে কাজ করছেন সড়কের নিরাপত্তা আনয়নে। সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী না থাকায় সড়কের শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তায় কাজ করছে শিক্ষার্থীরা। ছাত্রদের উৎসাহ দিতে রোডে নেমেছিলেন জনপ্রিয় এই নায়ক ।

এই নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি গেলে ওদের কাজ একটু বিশৃঙ্খল হয়ে যায়। সবাই ছুটে আসে, কথা বলে, ছবি তোলে। এ জন্য দুদিন যাইনি। সড়কে প্রত্যেকটা মুহূর্তে সচেতন থাকতে হয়। বিশৃঙ্খলা এড়ানোর জন্য যাইনি। তবু আগামীতে যাব, মোড়ে নেমে বাচ্চাদের একটু সাধুবাদ দিয়ে দ্রুত চলে আসব।’

নায়ক বলেন, ‘ ২০১৮ সালেও ছাত্ররা দেখিয়ে দিয়েছিল, কিভাবে সড়কে শৃঙ্খলা আনা যায়। তখন সরকার ও সুধীজনরা বলেছিল, তারা আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। কিন্তু কয়েক মাস পরই সে চোখ বন্ধ হয়ে গেছে! এখন ছাত্ররা আবার রাস্তায় নেমেছেন, এটা দেখে খুবই ভালো লাগছে। তবে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি এটা না। বাচ্চারা হাত দিয়ে ইশারা দিচ্ছে, গাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়াতে হচ্ছে—এগুলো খুব ঝুঁকিপূর্ণ। এরই মধ্যে দুর্ঘটনাও ঘটেছে। আমি বলতে চাই, যেসব ব্যবসায়ী ছাত্রদের রাস্তায় খাবারদাবার দিচ্ছেন, এর সঙ্গে কিছু লাল-সবুজ বাতির ব্যবস্থা করে দিন। সড়কের ট্রাফিক লাইটগুলোও ঠিক নেই। এগুলোর ব্যবস্থা করে দিন ‘

সড়কে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা না ফেরার কারণ জানিয়ে এ নায়ক বলেন, দুই-এক কথায় আসলে বলা যাবে না। সংক্ষেপে বলি, এখানে মূর্খ মানুষের রাজনীতি আছে। তারা সব সময় দেশের মানুষকে শাসন করতে চায়। সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ ছবিতে একটা দৃশ্য আছে। যেখানে বলা হয়েছে, প্রজারা যত বেশি জানবে, তত কম মানবে। আমাদের এখানেও যুগ যুগ ধরে এ বিষয়টি চলে আসছে। সড়কের যাঁরা শ্রমিক, তাঁদের জীবনমান উন্নয়নে কখনো কিছু করা হয়নি। নেতারা সব সময় তাঁদের লাঠিয়াল বাহিনীর মতো ব্যবহার করেছে। এ ছাড়া চাঁদাবাজি আছে। মোট কথা, নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বিধানে যাঁদের কাজ করার কথা, তাঁরাই করেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *