অন্যকে পানি পান করানোর প্রতিদান
দেশজুড়ে বয়ে যাচ্ছে অতি তীব্র তাপদাহ। এতে জনজীবন ওষ্ঠাগত।
জীবিকার তাগিদে প্রচণ্ড গরমের সঙ্গে যুদ্ধ করেই মানুষকে কাজ করতে হচ্ছে। কিছু পেশার লোক এমন আছে, যাদের কোনোভাবেই সূর্যের তাপ থেকে আড়ালে থাকার কোনো সুযোগ নেই। তাদের সার্বক্ষণিক কাঠফাটা রোদ মাথায় নিয়েই নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে হয়।
তীব্র গরমের দিনে এ ধরনের মানুষের সেবা করে জান্নাত অর্জনের সুযোগ রয়েছে। এক গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পান করিয়ে তাদের ক্ষণিকের স্বস্তি দিয়েও সদকার সওয়াব অর্জন করা সম্ভব। এজন্য বাসা, অফিস, দোকান ইত্যাদির সামনে বিনামূল্যে বিশুদ্ধ ঠাণ্ডা পানির ব্যবস্থা করা যেতে পারে। যার জন্য অনেক ধনী হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।
হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, সাদ ইবনে উবাদা (রা.) বলেন, (এক দিন) আমি (নবীজিকে) বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! কোন সদকা উত্তম? তিনি বলেন, পানি পান করানো। (নাসায়ি, হাদিস : ৩৬৬৫)
আর কেউ যদি পানি চেয়ে বসে, তাহলে তাকে পানি দেওয়ার সামর্থ্য থাকলে কোনোভাবেই নিষেধ করা যাবে না। কেননা নবীজি (সা.) কেউ পানি চাইলে তা দিতে অস্বীকৃতি জানাতে বারণ করেছেন।
হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আয়েশা (রা.) বলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! এমন কী জিনিস আছে, যা সংগ্রহে বাধা দেওয়া হালাল নয়? তিনি বলেন, পানি, লবণ ও আগুন। আয়েশা (রা.) বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! এই পানি সম্পর্কে তো আমরা জানি, কিন্তু লবণ ও আগুনের ব্যাপারে কেন বাধা দেওয়া যাবে না? তিনি বলেন, হে হুমায়রা! যে ব্যক্তি আগুন দান করল, সে যেন ওই আগুন দিয়ে রান্না করা যাবতীয় খাদ্যই দান করল। যে ব্যক্তি লবণ দান করল, ওই লবণে খাদ্য যতটা সুস্বাদু হলো তা সবই যেন সে দান করল। যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানকে এমন স্থানে পানি পান করালো, যেখানে তা সহজলভ্য, সে যেন একটি গোলামকে দাসত্বমুক্ত করল এবং যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানকে এমন স্থানে পানি পান করালো, যেখানে তা দুষ্প্রাপ্য, সে যেন তাকে জীবন দান করল। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৪৭৪)
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই অফুরন্ত সওয়াব অর্জনের তাওফিক দান করুন। আমিন।