চট্টগ্রাম

‘অ্যাক্টিভ’ হতে চায় পুলিশ

পুলিশ অ্যাক্টিভ পর্যায়ে যেতে চায় মন্তব্য করে জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের তাগিদ দিয়েছেন চট্টগ্রামের নতুন পুলিশ সুপার (এসপি) রায়হান উদ্দিন খান। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা জানান।

এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, ‘পুলিশ আসলে এখন একটু ইনেক্টিভ হয়ে আছে। আপনারা জানেন, জুলাই-আগস্টের পর এটি হয়েছে। আমরা অ্যাক্টিভ পর্যায়ে যেতে চাই। ইতিমধ্যে কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। এজন্য পাবলিক এবং সাংবাদিকদের সাথে আমাদের সম্পর্ক উন্নতি করতে হবে।’

মাঠ পর্যায়ে কিছু পরিবর্তনের কথা জানিয়ে নতুন পুলিশ সুপার বলেন,‘সব রাতারাতি চেঞ্জ হবে এরকম নয়। আমরা ফিল্ড লেভেলে কিছু চেঞ্জ আনতে চাই। একদিনে সব সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়। সব ধরনের মানুষকে যেন আমরা দ্রুত সার্ভিস দিতে পারি সেটা আমরা নিশ্চিত করবো।’

সেবাপ্রার্থীদের কুইক রেসপন্স করার কথা জানিয়ে সদ্য যোগ দেওয়া পুলিশ সুপার বলেন, ‘আমরা সাধারণ ডায়েরি করি, সেখানে হয়তো এক ঘণ্টা লাগে, আধঘণ্টা লাগে। কিন্তু আমরা চাই কুইক রেসপন্স করতে। সবগুলো সেবা প্রদানের সময় যেন আমরা কম সময়ে নিয়ে আসতে পারি। আমরা কুইক রেসপন্স করতে পারি কিনা—এই বিষয়টি নিয়ে আমি একটু কাজ করতে চাই।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের দ্বারা যতটুকু সম্ভব আমরা শতভাগ দিতে চাই। সিএমপি যেভাবে দিচ্ছে আজকে থেকে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশও সেভাবে রেসপন্স করবে। লজিস্টিক সাপোর্টের কারণে কিছু সেবা দিতে দেরি হতে পারে। কিন্তু আমরা চেষ্টা করব। দেখা গেল থানার এখিতিয়ার নেই, এরকম অনেক বিষয় নিয়েও অনেকে আসে। অনেকে না বুঝেই আসে। আসবে স্বাভাবিক, হয়তো সে অতটা বুঝে না। সেটাও আমরা ভালোভাবে বলে দিচ্ছি, এটা ক্রিমিনাল ম্যাটার না।’

পুলিশের ভুলগুলো গণমাধ্যমে আসা উচিত মন্তব্য করে গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি চাই ইতিবাচক সমালোচনা থাকুক। আমরা যেটি ভুল করছি সেটি অবশ্যই গণমাধ্যমে আসা উচিৎ। যত বেশি ইতিবাচক সমালোচনা থাকবে সেখান থেকে আমরাও শিখতে পারবো। কিন্তু যেটা আপনারা জানলেনও না একটি সংবাদ হয়ে গেল। অন্তত সেই নিউজ আমাদের কাছ থেকে একটা রেসপন্স নিয়েই করা উচিত।’

মামলার তদন্তের মানোন্নয়ন নিয়ে কাজ করবেন জানিয়ে সদ্য যোগদান করা এসপি বলেন, ‘ইনভেস্টিগেশনের কোয়ালিটি নিয়ে আমরা কাজ করতে চাই। আমরা চাই কত বেশি কোয়ালিটি ইনভেস্টিগেশন করা যায়। আর একটি বিষয় দেখতে হবে, ইনভেস্টিগেশন কি এভিডেন্স বেইজড হচ্ছে নাকি। এভিডেন্স বেইজড হলে সেটা ভালো রেজাল্ট আসবে।’

গণমাধ্যমকর্মীরা তথ্যের বিষয়ে জেলা পুলিশের কর্মকর্তাদের সহযোগিতা পান না— এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন নতুন ‍পুলিশ সুপার।

বৈধ অস্ত্র জমা এবং লুটকৃত অস্ত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত লাইসেন্স পাওয়া যেকোনো অস্ত্র ৪ সেপ্টেম্বরের অবৈধ। যদি এরকম কোনো অস্ত্রের তথ্য থাকে আমাদের নির্দিষ্ট নম্বরে আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন। আমরা চাই সবাই সহযোগিতা করুক। অগাস্টে লুটকৃত অস্ত্রগুলো উদ্ধার করার জন্য আমরা জনগণের সহযোগিতাও চাই।’

সভায় জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন লাইসেন্স স্থগিত করা বৈধ অস্ত্রের জমার পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, ‘আমাদের শতভাগ পুলিশ সময়মতো যোগদান করেছে। আর জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের হিসেবমতে, জেলার ১৫টি থানায় মোট ৩৮৮টি অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। গতকাল রাত পর্যন্ত এরমধ্যে ৩৩৩টি অস্ত্র জমা পড়েছে। এখানে আরেকটি বিষয় হচ্ছে অন্য জেলাতেও অস্ত্র জমা দেওয়ার সু্যোগ থাকে। যদি কোনো কারণে সেসব জেলায় লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্রধারী ব্যক্তি উপস্থিত থাকে। আজ অথবা কালকের মধ্যে আমরা জেনে যাব কোনো অস্ত্র জমার বাইরে আছে কিনা।’

মতবিনিময় সভায় জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) আসাদুজ্জামানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *