আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের নিচে ঈদগাহ ও জানাজার স্থান
২ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর মুরাদপুরের মোহাম্মদপুর এলাকায় আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের নিচে তৈরি হচ্ছে ঈদগাহ ও জানাজার নির্ধারিত স্থান। ৩০০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ৫২ ফুট প্রস্থের এই ঈদগাহে একত্রে নামাজ আদায় করতে পারবেন প্রায় দুই হাজার মুসল্লি। এছাড়াও, ঈদগাহ ও জানাজার স্থানের চারপাশে থাকছে ওয়াকওয়ে, বসার স্থান, টয়লেট ও ওযুর ব্যবস্থা। মুরাদপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দাদের ঈদগাহ ও জানাজার স্থান নিয়ে দীর্ঘদিনের সংকট নিরসন করতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। তবে নামাজ আদায়ের আগে-পরে ঈদগাহ ও জানাজার জন্য নির্ধারিত এই অংশকে দখলমুক্ত রাখার পাশাপাশি পথচারী পারাপারের বিষয়টিও নজরে রাখা প্রয়োজন বলে মনে করছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা।
গতকাল সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ঈদগাহ-জানাজার জন্য নির্ধারিত স্থানের দুই পাশে দুইটি সাইটবোর্ড ও ব্যানার টাঙানো রয়েছে। চারপাশে বাউন্ডারি নির্মাণের জন্য লোহার পাত দিয়ে ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে। এরপর সেখানে তার দিয়ে পুরোটা ঘেরাও করা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। ৩০০ ফুট জায়গাজুড়ে পুরো মেজেতে ইট বিছানো হয়েছে। আরো ইট সেখানে পড়ে থাকতে দেখা যায়। মোহাম্মদপুর এলাকার খাজা ভিলার স্বত্বাধিকারী হোসাইন পারভেজ বলেন, এলাকায় ঈদগাহ ও জানাজার জন্য কোন নির্ধারিত স্থান না থাকায় অনেক সময় সড়কে নামাজ আদায় করতে হতো। এতে যানবাহন চলাচলে বিঘœ ঘটতো। মানুষের ভোগান্তি বাড়তো। তাই চসিকের উদ্যোগে ঈদগাঁ ও জানাজার নির্ধারিত স্থানটি বাস্তবায়ন জরুরি।
নগরীর ৭ নম্বর পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মোবারক আলী বলেন, মোহাম্মদপুর ও মুরাদপুর এলাকা মিলে ১২ হাজার ভোটার এবং প্রায় ৫০ হাজারের মত লোকজন বসবাস করছেন। এ তুলনায় সেখানে পর্যাপ্ত মসজিদ নেই। তাই জানাজা ও দুই ঈদের নামাজের সময় সড়ক বন্ধ করে নামাজ আদায় করতে হতো। এসব চিন্তা করে আমরা সিডিএ চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করে, ফ্লাইওভারের নিচের এই অংশটিকে ঈদগাঁ ও জানাজার স্থান হিসেবে ব্যবহার করি। সম্প্রতি মেয়র মহোদয়ের আমাদের স্থানটিকে স্থায়ীভাবে ব্যবহারের সুযোগ করে দিয়েছেন।
ফ্লাইওভারের নিচে সড়কের মাঝখানে নামাজ আদায়ে যানবাহন চলাচলে বাধা হবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে কাউন্সিলর বলেন, আগে এখানে সড়ক বন্ধ করে জানাজা এবং ঈদের নামাজ আদায় করা হতো। সেসময় যানজটের একটা আশঙ্কা ছিল। এখন সেটি থাকবে না। তাছাড়া, ফ্লাইওভারের এই অংশে অ্যালুমিনিয়াম গলি এবং মোহাম্মদপুর গলি রয়েছে। পথচারীদের রাস্তা পারাপারের সুবিধার্থে আমরা সেখানে জেব্রা ক্রসিং করে দেব।
নগর পরিকল্পাবিদ ও স্থপতি আশিক ইমরান বলেন, পৃথিবীর কোথাও এমন নজির আছে কিনা আমার জানা নেই। তবে আমাদের যেহেতু পর্যাপ্ত জায়গা নেই, তাই এসব জায়গাকে পরিকল্পনার মাধ্যমে সঠিকভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
তিনি আরো বলেন, মুরাদপুর-মোহাম্মদপুর সড়কটি যেহেতু অন্যতম ব্যস্ততম একটি সড়ক। তাই যাতে কোনভাবেই পার্কিং এবং ফ্লাইওভারের নিচের অংশ দখল না হয়, প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাকে এসব বিষয় নজরে রাখতে হবে।