আনোয়ারায় ‘মর্যাদার লড়াইয়ে’ প্রার্থী পাল্টালেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী তৌহিদুল হক চৌধুরীই শেষমেশ পেলেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সমর্থন; তাঁকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন এম এ মান্নান চৌধুরী।
এর আগে গত ১ মে সন্ধ্যায় আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগ বর্ধিত সভা ডেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বটতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মান্নান চৌধুরীকে প্রার্থী ঘোষণা করে। ওই সভায় সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরী তাঁকে সমর্থন দেন।
একই দিন রাতে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানের অনুসারী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কাজী মোজাম্মেল হক প্রার্থী হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে আনোয়ারার চাতরী চৌমুহনীসহ বিভিন্ন জায়গায় আনন্দ মিছিল করেন ওয়াসিকার অনুসারীরা।
তবে এর দুই মাস আগে থেকে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা ঘোষণা করে মাঠে-ময়দানে জনসংযোগ করে আসছিলেন উপজেলা পরিষদের দুবারের চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী।
এরমধ্যে আজ এম এ মান্নান চৌধুরীকে বাদ দিয়ে তৌহিদুল হক চৌধুরীকে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী সমর্থন দিয়েছেন বলে জানাজানি হয়।
জানতে চাইলে এম এ মান্নান চৌধুরী বলেন, ‘আমি বাবু-পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞ। তাই এই পরিবার থেকে আমাকে যা নির্দেশ দিয়েছে, তা মেনে নিয়েছি।’ একথা বলেই ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তৌহিদুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমি ধৈর্য ধারণ করেছি। এটা ধৈর্যের ফল। জয় আমার হবে।’
আনোয়ারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে আগামী ২৯ মে। এই নির্বাচনকে এই উপজেলার ভোটাররা ‘মর্যাদার লড়াই’ হিসেবে দেখছেন। একদিকে আছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান। আরেক দিকে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। তাদের পক্ষে-বিপক্ষে রয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
আনোয়ারার রাজনৈতিক অঙ্গনের সবার চোখ এখন এই উপজেলার দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী মোজাম্মেল হক (আনারস) ও তৌহিদুল হক চৌধুরীর (দোয়াত কলম) দিকে। দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত। ফলে লড়াইটা আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগেরই।
এদিকে সাবেক মন্ত্রীর প্রার্থী পাল্টানোর খবর প্রকাশের পর খোশমেজাজে রয়েছেন তৌহিদুল হক চৌধুরী ও কাজী মোজাম্মেল হকের সমর্থকরা।
আনোয়ারা উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক শওকত ওসমান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘স্যালুট মান্নান ভাই। নেতার প্রতি আপনার যে আস্থা ও ভালোবাসা, আনোয়ারার মানুষ সারাজীবন মনে রাখবে আপনাকে।’
আনোয়ারা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জিয়া উদ্দিন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আনারসের বিজয়ের প্রথম ধাপ অর্জিত। চূড়ান্ত বিজয়ের অপেক্ষা!’
জানতে চাইলে চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমিসহ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ব্যাপারে জনগণই ভালো জানেন। সবার আমলনামাও জনগণের হাতে আছে। আমি তৃণমূল ও অবহেলিতদের আবার চাঙ্গা করতে চাই আনোয়ারায়। তাই যতই দল পাকাক লাভ হবে না। কারণ আনোয়ারার জনগণ আমার সাথে। জনগণ উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেবে। জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।’
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ২৯ মে আনোয়ারা উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আনোয়ারা উপজেলার ১১ ইউনিয়নে ৭৪টি ভোটকেন্দ্র আছে। তার মধ্যে স্থায়ী ভোটকক্ষ ৪৮৪টি এবং অস্থায়ী ভোটকক্ষ ৫০টি। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২৩ হাজার ৮৮৮ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৯ হাজার ২২১ জন।