আনোয়ারা উপজেলার সভা বর্জন করলেন ১০ ইউপি চেয়ারম্যান
আনোয়ার উপজেলা পরিষদের প্রথম সাধারণ সভা বর্জন করেছেন উপজেলার ১০ ইউপি চেয়ারম্যান। সদস্য সংকটের কারণে সাধারণ সভার কার্যক্রমও স্থগিত করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সকাল সাড়ে ১১টায় উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম সাধারণ সভা বর্জন করেন তারা।
সভা বয়কট করা চেয়ারম্যানরা জানান, একের পর এক চেয়ারম্যানদের ওপর হামলা করা হচ্ছে, প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
এরমধ্যে আজকের প্রথম সাধারণ সভায় উপজেলা চেয়ারম্যান স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নিয়ে সভায় যোগ দিয়েছেন। তাই নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কায় তারা সভায় অংশগ্রহণ করেননি।
সভা বর্জন করা চেয়ারম্যানরা হলেন, ১ নং বৈরাগ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নোয়াব আলী, ২নং বারশত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম শাহ, ৩নং রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিন শরীফ, ৪নং বটতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম এ মান্নান চৌধুরী, ৬নং বারখাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল জলিল চৌধুরী শাকিল, ৭নং সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অসীম কুমার দেব, ৮নং চাতরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন চৌধুরী সোহেল, ৯নং পরৈকোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল হক বাবুল, ১০নং হাইলধর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কলিম উদ্দিন চৌধুরী, ১১নং জুইদন্ডী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাষ্টার ইদ্রিস।
চাতরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের একাধিক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত চেয়ারম্যানদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। উপজেলা চেয়ারম্যান মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে বিভিন্ন মামলার আসামি ও সন্ত্রাসীদের নিয়ে আজকের সভায় গিয়েছেন। যারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ মান্নানের উপর হামলা করেছিলেন। পুলিশ থেকে আসামি ছিনিয়ে নিয়েছিল। ইচ্ছে থাকা স্বত্ত্বেও নিরাপত্তাহীনতায় আমরা সভায় অংশগ্রহণ করিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইশতিয়াক ইমনের বলেন, শপথ গ্রহণের এক মাসের মধ্যে সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হতে হয়। সে হিসেবে বৃহস্পতিবার প্রথম সাধারণ সভার আহ্বান করা হয়। সভায় উপজেলা চেয়ারম্যান, একজন ইউপি চেয়ারম্যান এবং দপ্তর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। তাই বিভিন্ন বিষয়ে সভার আলোচনা করেছি।
তিনি আরও বলেন, মূলত কোনো বিষয়ে ভোট গ্রহণের ক্ষেত্রে কোরামের যারা সদস্য আছেন ইউপি চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য, পরিষদের তিন চেয়ারম্যানকে প্রয়োজন হয়। এছাড়া আজ শুধু আলোচনা হয়েছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী মোজাম্মেল হক বাংলানিউজকে বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানদের সভার চিঠি ছাড়াও একাধিকবার ফোন করে জানানো হয়েছে। তারপরও তারা উপস্থিত হননি। তারা হয়তো মনে করছেন, তারা না আসলে উপজেলা পরিষদ অকার্যকর হবে। তারা হয়তো নির্বাচনের এই বিজয়কে মেনে নিতে পারছেন না। তাই তারা একেক ইস্যু দেখিয়ে সংকট সৃষ্টি করতে চাচ্ছেন। তবে মনে হয় না কোনো সংকট সৃষ্টি হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে যে গণতান্ত্রিক ধারা সৃষ্টি হয়েছে, তা ব্যাহত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। আশা করি তারা সফল হবে না।
এ চক্রান্তের নাটের গুরু বারশত ইউপি চেয়ারম্যান (এম এ কাইয়ুম শাহ্)। আর চাতরীর চেয়ারম্যান (আফতাব উদ্দিন চৌধুরী সোহেল)। তারাই এখন নিরাপত্তার গল্প সাজায়।
এদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইশতিয়াক ইমনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মৃণাল কান্তি ধর, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান এম এ মান্নান মান্না, ৫নং বরুমচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল ইসলাম চৌধুরী, নারী ভাইস চেয়ারম্যান চুমকী চৌধুরী প্রমুখ।