চট্টগ্রাম

আপনি কি ক্ষুধার্ত? টাকা নাই? গোপনে আমাকে বলুন।

চট্টগ্রাম: ‘আপনি কি ক্ষুধার্ত? টাকা নাই? গোপনে আমাকে বলুন। আমাকে বলুন পেট ভরে খেয়ে যান। রিকশাভ্যানে ছোট্ট একটি স্ট্রিট ফুডের স্টলে লেখাগুলো নজর কাড়ছিল দূর থেকেই। এটি নজরুল ইসলামের স্টল।

চাঁদপুর সদরে তাঁর বাড়ি। দুই বছর ধরে খাবারের স্টলটি পরিচালনা করছেন তিনি। তবে বিনা পয়সায় ক্ষুধার্তদের খাওয়ানোর সেবাটি চালু করেছেন মাস দুয়েক হবে।

সরেজমিন দেখা গেছে, নগরের দুই নম্বর গেট এলাকার ফিনলে স্কয়ারকে ঘিরে স্ট্রিট ফুডের মেলা বসে প্রতিদিন বিকেলে। বেশ কিছু স্টলে লাইভ কিচেনে শিক কাবাব, লুচি, মোমো, বেগুনি, ডালপুরি, লুচি তৈরি করে গরম গরম পরিবেশন করা হচ্ছে। রয়েছে বিফ মাসালা, চিকেন মাসালা, কাঁকড়া, ছোলা মাসালা, আলুর দমসহ লোভনীয় সব খাবার। নানা বয়সী মানুষ এসব খাবার খেতে ছুটে আসেন। কেউ সপরিবারে, কেউ সবান্ধবে। মুখরোচক খাবারের সঙ্গে চলে ভোজনরসিকদের জমজমাট আড্ডা। মোটামুটি রাত ১২টা পর্যন্ত সরগরম থাকে স্টলগুলো।

নজরুল ইসলামের স্টলে কথা হয় তাঁর ভাগিনা মো. রিফাতের সঙ্গে। তিনি জানান, এখানে চিকেন মাসালা প্রতি প্লেট ৬০ টাকা, পার্সেল ৮০ টাকা। বিফ প্রতি প্লেট ৯০ টাকা, পার্সেল ১৪০ টাকা। ছোলা মাসালা ৪০ টাকা, পার্সেল ৫০ টাকা। চিকেন লিভার ৬০ টাকা, পার্সেল ৮০ টাকা। আলুর দম ৩০ টাকা, পার্সেল ৫০ টাকা। লুচি প্রতিটি ৫ টাকা। প্রতিদিন বিকেল ৩টায় রিকশাভ্যানে খাবার সাজিয়ে নিয়ে আসেন তারা। মাগরিবের নামাজের আগেই স্টলে আসেন নজরুল ইসলাম। তিনি নিজেই খাবারগুলো তৈরি করেন বাসায়।

নজরুল ইসলাম ফোনে বাংলানিউজকে বলেন, আমি প্রচারের জন্য ক্ষুধার্তদের ফ্রি খাওয়ানোর সেবাটি চালু করিনি। মানবিক বোধ থেকে মাস দুয়েক হলো এটি চালু করেছি। আমি দেখেছি নানা বয়সী মানুষ লজ্জায় বলতে চায় না কিংবা বলতে পারে না আমি ক্ষুধার্ত আমাকে কিছু খেতে দিন। এর মধ্যে ছাত্র আছে। ভিক্ষুক আছে। প্যান্ট শার্ট পরা অনেক ভদ্রলোকও আছে। অনেক প্রবীণ মানুষ বয়স হলে সব কিছু ভুলে যান। টাকা না নিয়েই ঘর থেকে বের হয়ে আসেন। হাঁটাহাঁটির এক পর্যায়ে ক্ষুধার্থ হন। কিন্তু পকেটে টাকা নেই!

একজন ছিন্নমূল সত্তরোর্ধ্ব নারী নিয়মিত আসেন। যা খেতে চায় খাওয়াই। তারপর দুই হাত তুলে দোয়া করেন। মনটা ভরে যায়। এ দোয়া কোটি টাকা দিয়েও পাওয়া যাবে না। ’ বললেন নজরুল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *