চট্টগ্রাম

আমার আঙুলের ইশারায় অনেক কিছু হয়ে যাবে

‘আমার অনেক বন্ধু বান্ধব রাজনীতি করে তাই আমার আঙুলের ইশারায় অনেক কিছু হয়ে যাবে। আর বদলি টদলি এগুলো আমার জন্য কোন বিষয় না, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আমাকে বিভাগীয় বদলির আদেশ দিয়েও যোগদান করাতে পারে নাই। ইচ্ছেমতো বিল করতে না পেরে আনোয়ারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সদ্য যোগ দেওয়া হিসাবরক্ষক মো. সাহেদ মিয়াকে এভাবেই শাসাচ্ছিলেন হাসপাতালের স্টোর কিপার মো. মনছুরুল ইসলাম।

এ ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কায় চট্টগ্রাম সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন হিসাবরক্ষক সাহেদ মিয়া। এদিকে এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে সিভিল সার্জন কার্যালয়। ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. ওয়াজেদ চৌধুরী, আনোয়ারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আাবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মোছাৎ ফারজানা আক্তারকে এবং এমও (পিএস) ডা. মো. নওশাদ খানকে নিয়ে করা এ তদন্ত কমিটি ঘটনা তদন্ত করছেন।

সাহেদ মিয়ার অভিযোগ, গত ১৮ মে আনোয়ারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন তিনি। এরপর গত ২১ মে হাসপাতালের বাইরে নাস্তা করতে গেলে স্টোর কিপার মনছুরুল ইসলাম বাইরের লোকজন নিয়ে তার কোনো কাজে হস্তক্ষেপ না করার বিষয়ে তাকে বিভিন্ন হুমকি ধমকি দেয়।

সাহেদ মিয়া বলেন, গত ১ মে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কক্ষে দাপ্তরিক বিষয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে স্টোর কিপার মনছুরুল ইসলাম প্রবেশ করে কুমিল্লা থেকে মালামাল পরিবহনের বিষয়ে কথা তোলে। পরিবহনের খরচ হিসেবে এমএসআর বাবদ বরাদ্দের টাকা থেকে ৩ লাখ টাকা উত্তোলন করে এবং এর বাইরেও অন্যান্য খরচ হিসেবে প্রায় ১ লাখ টাকার মতো দাবি করে। এ সময় টিএইচও (স্বাস্থ্য কর্মকর্তা) স্যার এ বিষয়ে আমার কাছে পরামর্শ চাইলে আমি বলি, “আমার আগের কর্মস্থল বাঁশখালী আনোয়ারা থেকে দূরে তারপরও সেখানে পরিবহন খরচ হিসেবে দেড় লাখ টাকা নিতো। এখানে তিন লাখ টাকা নেওয়ার পরও আরো টাকা চাইছে। এ কথা শোনার পরপর স্টোর কিপার মনছুরুল রেগে গিয়ে বলে, “এটা বাঁশখালী না, এটা আনোয়ারা, আনোয়ারার সাথে অন্য উপজেলার তুলনা দিয়ে লাভ নাই। ’ এর ঘণ্টা খানেক পর স্টোর কিপার মনছুরের সাথে হাসপাতালের গেইটে দেখা হলে তিনি আমাকে অকাথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বিভিন্ন প্রকার হুমকি-ধমকি দিয়ে বহিরাগত দিয়ে আক্রমণের হুমকি দেয়।

এই হাসপাতালের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী মারধরের স্বীকার হয়েছে তোরও একই অবস্থা হবে। সামনে খাদ্যের টেন্ডার হবে যদি উল্টা পাল্টা শুনি খবর আছে বলে দিচ্ছি। মনে রাখিস আমি এখানকার স্থানীয় ছেলে এবং আমার বাড়ি হাইলধর’। এসব ঘটনায় আমি ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে বদলীর জন্য আবেদন করেছি।

এ প্রসঙ্গে স্টোর কিপার মো. মনছুরুল ইসলাম বলেন, আনোয়ারা হাসপাতালে রোগী বেশি। অন্য হাসপাতালে ভ্যাকসিন আনতে একটা কুল বক্স নিলে হয়, আনোয়ারায় আমি বেশি ভ্যাকসিন আনার জন্য দুটি কুল বক্স নিয়ে যাই যার কারণে আমার সাথে একজন এমএলএসএস (পিয়ন) নিয়ে যেতে হয়। যার খরচটা বিল করতে পারিনা। টিএ বিল দিয়ে খরচটা পোষাতে হয়। সেদিন ভ্যাকসিন আনতে এমএলএসএস (পিয়ন) নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার সাথে আমার তর্কাতর্কি হয়েছে।

হুমকি ধমকির অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি হয়েছে। তদন্ত কমিটি প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নিবে।

আনোয়ারা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. মামুনুর রশীদ জানান, অভিযোগটা পেয়েছি, এ বিষয়ে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যলায় থেকে তদন্ত কমিটি হয়েছে। তদন্ত কমিটি বিষয়টি দেখছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *