আশুলিয়া থানায় ওসির চেয়ারে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা
বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ১০ মিনিট। আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কক্ষে বিভিন্ন বয়সী অন্তত ২০ জন লোক জটলা পাকিয়ে আছে।
ওসির চেয়ারে বসে আছেন নীল রঙের পাঞ্জাবি পরা মাঝ বয়সী একজন। একটা সাদা কাগজ সামনে রেখে কথা বলছেন চেয়ারে বসে। কখনো পাশের লোকের সঙ্গে কানে কানে কথা বলছেন।পুলিশের পোশাক পরা কাউকেই ওই কক্ষে দেখা যায়নি। নীল পাঞ্জাবি পরা লোকটিকে দেখে মনে হচ্ছিল তিনিই আশুলিয়া থানার নবাগত ওসি।কিন্তু পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ওসির চেয়ারে বসলেও ওসি নন তিনি। তিনি আশুলিয়া থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান মাস্টার।
থানার ভেতরে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের এমন আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আশুলিয়া থানার কয়েকজন পুলিশ সদস্য বলেন, ‘থানায় এখনও ওসির পোস্ট খালি। ওসির কক্ষে বর্তমান পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদুর রহমান বসেন।’তারা আরও জানান, ঢাকা থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এলেও ওসির কক্ষে বসেন।
চেয়ারে অন্য কে বসে আছে জানতে চাইলে এক পুলিশ সদস্য বলেন, ‘তিনি স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা। তিনি যে চেয়ারটিতে বসেছিলেন মূলত ওই চেয়ারটিতে ওসি পদমর্যাদার কর্মকর্তারা বসেন। এখন বসলে কী করা যাবে। আফসোস করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই।’
ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক সাংবাদিক স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা জিল্লুর রহমানকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কী থানার নতুন ওসি? থানায় তো ওসির পোস্টটি খালি।’জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাকে ওসি তদন্ত বসার অনুমতি দিয়েছেন, এজন্য বসেছি।’এসময় পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদুর রহমান সেখানে উপস্থিত হন। এবং ওই নেতাকে প্রশ্ন না করার অনুরোধ জানান।যোগাযোগ করা হলে ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান মোহন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘জিল্লুর রহমানের এক ভাইয়ের নামে ও তার এক কর্মীর নামে মিথ্যা মামলা হয়েছে। এজন্য তিনি থানায় গিয়েছেন।’
ওসির চেয়ারে বসার বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তিনি ওসির চেয়ারে যে বসেছেন এটা আমি জানি না। উনি একজন শিক্ষিত মানুষ। হয়তো কোনো কর্মকর্তা তাকে বসতে বলেছেন বলেই বসেছেন।’এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার খন্দকার মুঈদের ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। সূত্র : ডেইলি স্টার