দেশজুড়ে

আসামিকে না পেয়ে নারীর মাথায় পিস্তল ঠেকালেন পুলিশ কর্মকর্তা!

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসামি ধরতে গিয়ে তাকে না পেয়ে বাড়ির নারী ও শিশুদের মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) বিরুদ্ধে।

শনিবার (১১ মে) বিকেলে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিওতে দেখা যায় এক নারীর মাথায় পিস্তল তাক করার দৃশ্য।

জানা যায়, থলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা ও সৌদি প্রবাসী নূরুল আলম নূরুর বিরুদ্ধে মাসখানেক আগে সদর থানায় মামলা হয়। মামলায় অভিযোগ করা হয় নুরুল ইসলাম সৌদি থেকে আরেকজনের স্বর্ণ এনে পুরোটা বুঝিয়ে দেননি।

শুক্রবার বিকেলে নুরুল ইসলাম বাড়িতে থাকার খবর পেয়ে ডিবি পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়িতে উপস্থিত নারীসহ অন্যদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশকে পিস্তল তাক করতে দেখা যায় এক নারীকে লক্ষ্য করে। তবে আসামি না পেয়ে পরে পুলিশ সেখান থেকে চলে যায়।

ঘটনার সময় উপস্থিত নূরুল আলমের ভাই সারোয়ার আলম অভিযোগ করে বলেন, সাদা পোশাকে আসা লোকজন বাড়িতে ঢুকেই ভাইকে খোঁজ করতে থাকে। ভাই বাড়িতে নেই বলা হলেও তারা বিষয়টি মানতে চায়নি। এ সময় পুলিশ সদস্যরা আমার ভাইয়ের স্ত্রী বন্যা বেগমসহ কয়েকজনকে মারধর করে। নিশাত নামে নয় বছরের এক শিশুও তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। এমনকি আমার ওপরও হামলা হয়। এ সময় মোবাইল ফোনে করা কিছু ভিডিও তারা মুছে দিয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে স্বর্ণ সংক্রান্ত বিষয়ে মামলা হয়েছে। স্বর্ণ আমার ভাই আনেনি। অন্যের মাধ্যমে আমার ভাইয়ের কাছে দেওয়া হয় বলছে তারা। আমার ভাইকে ধরতে হলে কেন আমাদের বাড়িতে এভাবে হামলা হবে। বিষয়টি আমরা থানা পুলিশকে জানিয়েছি। আদালতে এ নিয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি। পুলিশ পিস্তল তাক করার পাশাপাশি গুলিও করেছে। গুলির খোসাও আমাদের কাছে আছে। তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে ওই গুলির খোসা কার পিস্তলের। ’

ডিবি পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম বলেন, ‘ আসামি তার বাড়িতে আছে- বাদী পক্ষ বিষয়টি আমাদের জানালে প্রথমে পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মোফাজ্জল আলী একজন কনস্টেবলকে নিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর আমি যাই। দূর থেকেই ওই বাড়িতে চেঁচামেচি শুনছিলাম। আমি যাওয়ার পর তারা খারাপ আচরণ করে। আসামিকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে। এ নিয়ে ধস্তাধস্তিও হয়। ’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার হাতে পিস্তল ছিল। তবে কারো দিকে তাক করিনি। কাউকে মারধর করা হয়নি। আমাদের টার্গেট যেহেতু আসামি ধরা সেহেতু সেই লক্ষ্যেই আমরা এগুচ্ছি। যে কারণে তখন আমরা অ্যাকশনে যাইনি। ’

তিনি জানান, মামলার তদন্তভার আমাদের হাতে। মূল আসামির বিরুদ্ধে প্রায় ৪০০ গ্রাম স্বর্ণ আত্মসাতের অভিযোগ আছে। মামলা হওয়ার পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছে। সদর উপজেলা বিশ্বরোড এলাকার বাদী এসে বাড়িতে আসামির অবস্থানের কথা জানালে সেখানে যাওয়া হয়।

এ বিষয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবির) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসাইন বলেন, ‘আসামি ধরতে গিয়ে ওই বাড়িতে সমস্যা হয়। তবে যেহেতু কোনো পুলিশ আহত হননি সে কারণে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ’ গুলি করা কিংবা পিস্তল তাক করার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *