আন্তর্জাতিক

ইংল্যান্ড থেকে ১০০ টন স্বর্ণ ফিরিয়ে আনছে ভারত

ব্রিটেনের ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের মাটির নিচে জমা রাখা ১০০ টনের বেশি স্বর্ণ ফিরিয়ে আনছে ভারত। এই স্বর্ণগুলো দেশেই রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার ভল্টে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। এই টনকে টন স্বর্ণকে ঘিরে এখন ভারতজুড়ে চলছে যত আলোচনা। সাধারণ মানুষের মনেও জন্ম দিয়েছে কৌতূহলের।

এখন প্রশ্ন উঠছে, যে ইংরেজরা প্রায় ২০০ বছর শোষণ করেছে, তাদের কাছেই কেন ভারত স্বর্ণ রাখা রাখল? স্বর্ণ রাখার কী প্রয়োজন পড়ল ভারতের? সেই সব প্রশ্নের উত্তর জানতে ঘাঁটতে হবে ইতিহাস।

জানা গেছে, ভারত বিদেশ থেকে মূলত তেল আমদানি করে থাকে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গেই এই ব্যবসা করে ভারত। ১৯৯১ সালের আগে ভারতে প্রয়োজনীয় তেলের বেশির ভাগ জোগান আসত ইরাক থেকে। কিন্তু নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে ইরাক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। একই সঙ্গে ছিল আমেরিকার চোখ রাঙানি। সব মিলিয়ে তেলের দাম হু হু করে বৃদ্ধি পেতে থাকে। এতে ভারতে তেলের সংকট দেখা দেয়। তেল কিনতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত ডলারের। কারণ বিদেশে ভারতের মুদ্রা রুপি চলে না। কীভাবে ডলার পাওয়া যাবে তার পথ খুঁজতে থাকে তৎকালীন সরকার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং বিশ্ব ব্যাংক থেকে ডলার নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না ভারতের। কিন্তু সেখান থেকে ডলার নিতে গেলে মেনে চলতে হতো তাদের দেওয়া শর্ত। ভারত সেসময় বিকল্প পথ খুঁজতে থাকে। তখনই স্বর্ণ বিদেশি ব্যাংকে জমা রাখার পরিকল্পনা মাথায় আসে সরকারের। তবে আমেরিকার দৃষ্টি এড়িয়ে স্বর্ণ অন্য কোনও বিদেশি ব্যাংকে জমা রাখাই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ।

গোপনে স্বর্ণ ব্যাংক অব ইংল্যান্ড এবং ব্যাংক অব জাপানের কাছে জমা রাখে ভারত। তার বিনিময়ে ডলার নেয়। এই পুরো কাজটি ভারত সরকার গোপনে করার চেষ্টা করলেও কয়েকটি সংবাদপত্রে তা ফাঁস হয়ে যায়। ফলে বিদেশে জমা রাখা স্বর্ণই ভারতে ফেরানো শুরু হয়েছে।

একইসঙ্গে রাশিয়া এবং ইউক্রেন যুদ্ধে আমেরিকা, ইংল্যান্ডসহ অনেক দেশই রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ভারতও তাই ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভারতের কাছে এখন স্বর্ণ রয়েছে ৮২২ মেট্রিক টন। বিগত পাঁচ বছরে ভারত ২০৩.৯ মেট্রিক টন স্বর্ণ কিনেছে। তার মধ্যে কিছু মজুত রয়েছে আরবিআইয়ের কাছে। কিছু বিদেশি ব্যাংকে জমা রাখা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *