ইসরাইলের সমালোচনা করায় সৌদিতে দেশটির নাগরিককে গ্রেপ্তার
সৌদি আরবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইসরাইলবিরোধী পোস্ট করলেই দেশটির নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। রিয়াদ ও তেল আবিব আবারও কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পথে এগোচ্ছে, এমন কানাঘুষার মধ্যেই সামনে এলো এ খবর।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরাইলি গণহত্যার বিরোধিতা করায় সৌদিতে এরইমধ্যে অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। তবে ঠিক কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা স্পষ্ট জানানো হয়নি ওই প্রতিবেদনে।
ইসরাইল বিরোধী মনোভাব প্রকাশের দায়ে যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন তাদের মধ্যে একজন একটি কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তা। কোম্পানিটি সৌদির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের একটি প্রজেক্টে কাজ করছে বলে জানা গেছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সৌদি সরকারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, ওই কর্মকর্তা গাজায় চলমান হামাস ও ইসরাইলের যুদ্ধ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে লেখালেখি করেছিলেন।
গ্রেপ্তার আরেক সৌদি নাগরিক যিনি একজন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ব্র্যান্ডগুলোকে বয়কট করার আহবান জানিয়ে বলেছিলেন, ইসরাইলকে কখনই ক্ষমা করা উচিত নয়। আর এ অপরাধেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরেকটি সূত্র বলছে, সৌদিতে ইরানপন্থি একটি প্রভাবের বিস্তার ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে রিয়াদ। সেই আশঙ্কা থেকেই বহু নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যদিও সৌদি সরকার বারবার বলে আসছে, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত ইসরাইলের সাথে সৌদির কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন সম্ভব নয়।
কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনা দেখে বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবে মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে অবস্থান বদলাচ্ছেন ক্রাউন প্রিন্স সালমান। এর আগে গেলো অক্টোবর মাসের ৭ তারিখে ইসরাইলে এই দশকের সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান চালায় গাজার হামাস সরকার। এর পরপরই গাজায় বিমান হামলা ও স্থল হামলা শুরু করে ইসরাইল।
ইসরাইলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৩২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন ৮০ হাজারের বেশি মানুষ। এছাড়াও নিখোঁজ রয়েছেন কয়েক হাজার গাজাবাসী।
ইরান, সৌদি, জর্ডান, ইয়েমেনসহ মধ্যপ্রাচ্যের অধিকাংশ দেশের জনগণ এ গণহত্যা বন্ধের আহবান জানিয়ে আসছে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবে সৌদি ও মিশর সরকার আপাতত নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। অন্যদিকে জর্ডান সরকার সরাসরি ইসরাইলের পক্ষ নিয়েছে।