উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের হাওয়া: সরব আ. লীগের ৮ প্রার্থী
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেশ কাটতে না কাটতেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে চন্দনাইশের রাজনৈতিক অঙ্গনে। আওয়ামীলীগের ৮ জনসহ ১০ প্রার্থী এখন সরব।
আলহাজ নজরুল ইসলাম চৌধুরী পর পর তিনবার আ.লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় উপজেলা আ.লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা যথেষ্ট ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে। ফলে আ. লীগ, যুবলীগের অনেক নেতা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার চৌধুরী গতবছর ২৮ নভেম্বর উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে এ পর্যন্ত যারা প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন দক্ষিণ জেলা আ. লীগের সহ-সভাপতি, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, কাসেম মাহাবুব উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. কাসেম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য আবু আহমদ জুনু, কেন্দ্রীয় যুবলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা মীর মো. মহিউদ্দিন, দক্ষিণ জেলা আ. লীগের উপদেষ্টা, মক্কা আওয়ামী ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোজাম্মেল হক, গাছবাড়ীয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি শেখ টিপু চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আ. লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক বরকল ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রহিম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক, চামুদরিয়া ইউনাইটেড ইস্টিটিউট উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি তৌহিদুল আলমসহ ৮ জনের অধিক।
যদি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক না থাকে তাহলে প্রার্থীর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে বিজ্ঞ মহলের ধারণা। যদিও বিএনপি ও এলডিপি নির্বাচন বর্জনে রয়েছে, যদি কোন কারণে তারা নির্বাচনে অংশ নেয় তাহলে উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি থেকে সাবেক উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি, দক্ষিণ জেলা বিএনপি নেতা এডভোকেট নুরুল ইসলাম, উপজেলা এলডিপি সাধারণ সম্পাদক আকতার আলম সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন বলে জানা যায়।
২০১৯ সালের ২৪ মার্চ ৪র্থ ধাপে চন্দনাইশ উপজেলার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। নির্বাচনে কয়েকটি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত থাকার কারণে একই বছর ৭ জুলাই উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২৪ জুলাই উপজেলা পরিষদের ১ম সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা পরিষদ আইন ১৯৯৮ এর ১৭ (১) (গ) ধারা মতে পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ থেকে পূর্ববর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। ১৯৮৫ সালে ১ম, ১৯৯০ সালে ২য়, ২০০৯ সালে ৩য় , ২০১৪ সালে ৪র্থ, ২০১৯ সালে ৫ম বারের মত উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে অনেকে সক্রিয় থাকার কারণে উপজেলা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে রয়েছেন। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. কাসেম দীর্ঘ সময় ধরে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। পাশাপাশি দক্ষিণ জেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি হিসেবে রয়েছেন। উপজেলা আ.লীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর ২০১৩ সালের জুলাই মাসে উপজেলা আ. লীগের সভাপতি হওয়ার পর থেকে দলীয় কার্যক্রম সক্রিয়ভাবে পরিচালনা করেছেন এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থিতা চেয়ে দলীয় মনোনয়ন চেয়ে ছিলেন। তিনি এবার উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। অপরদিকে উপজেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক জাতীয় নির্বাচনে নৌকার পক্ষে সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রেখেছেন। পাশাপাশি তিনি পর পর দুইবার জেলা পরিষদের মেম্বার নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের সাথে মনোনয়ন দৌড়ে রয়েছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা মীর মো. মহিউদ্দিন। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের নিকট এ সকল প্রার্থীদের গ্রহণযোগ্যতা ও ইমেজ রয়েছে। তবে, সম্ভাব্য প্রার্থীদের একটিই কথা, দলের হাইকমান্ড যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে অন্যরা কাজ করবেন। কেউ দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কিছু করবেন না বলে জানান। তবে নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেলে হয়তো অনেকে প্রার্থী হতে পারেন এমন মন্তব্য বিজ্ঞ মহলের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৪ মার্চ অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চন্দনাইশ উপজেলাতে নৌকার প্রার্থী প্রয়াত এ.কে.এম নাজিম উদ্দিনের সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থী সদ্য পদত্যাগকারী উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার চৌধুরীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছিল। যদি বিএনপি ও এলডিপি উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়, তাহলে তাদের ২ প্রার্থীর সাথে আ. লীগের প্রার্থীর ভোট যুদ্ধ হবে।