এইচএসসি : ‘ভুল’ প্রশ্ন বিতরণ, ১০টার পরীক্ষা শুরু ১২টায়
এইচএসসি পরীক্ষার রুটিন অনুযায়ী আজ (বৃহস্পতিবার) পদার্থবিজ্ঞান প্রথম পত্রের প্রশ্ন হাতে পাওয়ার কথা ছিল শিক্ষার্থীদের। তবে প্রশ্ন হাতে পেয়েই সবার কপালে হাত। হলরুমে বসে প্রশ্ন পান পদার্থবিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্রের। পরে শিক্ষার্থীদের হৈচৈ দেখে ‘ভুল’ প্রশ্নটি নিয়ে নেওয়া হয়। এর প্রায় দুই ঘণ্টা পর ‘সঠিক’ পত্রের প্রশ্ন হাতে পান পরীক্ষার্থীরা। এদিকে, ‘ভুল’ প্রশ্ন বিতরণের ফলে সকাল ১০টার পরীক্ষা শুরু হয়েছে বেলা ১২টার দিকে। তবে ‘কার’ ভুলে এমনটা হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রশ্নপত্র ভুলের এমন কাণ্ড ঘটেছে— চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী ইউনিয়নের বিজয় স্মরণি ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রে। পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, পরীক্ষার শুরুতে ভুল প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হয়। প্রশ্ন হাতে পেয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হৈচৈ শুরু হয়। এরপর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রশ্নপত্রটি পুনরায় সংগ্রহ করে পরীক্ষা স্থগিত করে দেওয়া হয়। তবে ২ ঘন্টা পর প্রথম পত্রের প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করে পুনরায় পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
এদিকে, এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে একটি ও সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় থেকে একটি। এরমধ্যে ইউএনও কার্যালয় থেকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আলাউদ্দিনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। কমিটির অপর দুজন সদস্যরা হলেন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুস্তাফা আলম সরকার ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হাবিবুল্লাহ। তবে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যদের নাম জানা যায়নি।
‘ভুল’ প্রশ্ন বিতরণের বিষয়ে জানতে ওই কলেজের প্রিন্সিপাল কেন্দ্র সচিব শিব শংকর শীলের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুস্তাফা আলম সরকার বলেন, ‘পরীক্ষার আগের রাতে প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করার দায়িত্ব থাকে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র সচিবের। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ট্রেজারি থেকে প্রত্যেক কেন্দ্র সচিবকে বা তাদের প্রতিনিধিকে প্রশ্নপত্র বুঝিয়ে দেওয়া হয়।’
সীতাকুণ্ড নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কার ভুলে এ ঘটনা ঘটেছে তদন্ত করে দেখা হবে। উপজেলা প্রশাসন থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠনা করা হয়েছে। এতে উপজেলা প্রশাসন থেকে সরকারি কমিশনার (ভূমি) মো. আলাউদ্দিনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। কমিটির অপর দুজন সদস্য হলেন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুস্তাফা আলম সরকার ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হাবিবুল্লাহ।’
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেজাউল করিম বলেন, ‘পরীক্ষার প্রশ্ন বিতরণের দায়িত্ব জেলা প্রশাসনের। আর দেখেশুনে প্রতিদিন সকালে প্রশ্ন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার। কোথাও একটা ভুল হয়েছে বলে এই ঘটনা ঘটেছে। তবে ভুল প্রশ্নপত্র বিতরণের বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং সময় সমন্বয় করে প্রথম পত্রের পরীক্ষা হয়েছে। পরবর্তী পরীক্ষার দিনে বিকল্প প্রশ্নে পদার্থবিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা হবে না।’