একমাস অপেক্ষা করেন, প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিয়ে যাবো: ব্যারিস্টার সুমন
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের এক মাস তথা আপিল বিভাগের রায় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেছেন জাতীয় সংসদের স্বতন্ত্র সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের অ্যানেক্স ভবনের সামনে সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন।
সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বলেন, কোটা সংস্কারের আন্দোলন চলছে। আন্দোলনকারীরা প্রোগ্রাম ডেকেছে। আবার ছাত্রলীগও। তার মানে মারামারি অবধারিত। প্রধানমন্ত্রী সংস্কারের কথা বলেছেন, যারা আন্দোলন করছেন তারাও যৌক্তিক সংস্কারের কথা বলছেন। দুইপক্ষের চাওয়া এক, তারপরও আন্দোলন কেন?
প্রথমে এ আন্দোলনকে যৌক্তিক মনে করেছি। কিন্তু যখন এ আন্দোলনে রাজাকার স্লোগান চলে আসলো, যখন সরকার ও দেশবিরোধী কিছু মানুষও এ আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে, তখন সরকার বসে থাকতে পারে না। কোটা সংস্কার আন্দোলনটা সরকার বিরোধী আন্দোলন দিকে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে এবং সরকারও তাই মনে করছে।
সুমন বলেন, এখন কোটার বিষয়টি আদালতের এখতিয়ার। আপনি আদালতকে যদি না মানেন তাহলে আরেকটা সাংবিধানিক সংকটে পড়ে যাবো। আজকে যারা মুখোমুখি হচ্ছেন তাদের প্রতি আমার একটা দাবি; বেশ কিছুদিন ধরে সাধারণ মানুষের কষ্ট হচ্ছে, আমি বলছি না আপনাদের দাবি অযৌক্তিক। আমি বলছি দাবি আদায়ের প্রক্রিয়াটা আদালত দেওয়া সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করা যায় কিনা; আদালত আগামী একমাসের মধ্যে এটার সমাধান দেবেন বলছেন। প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিল করে গেজেট করেছেন। আমার বিশ্বাস উনি আবার একটা যৌক্তিক সমাধান দিতে পারবেন।
আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, আপনারা কোটার কথা বলে যদি সরকার ফেলে দিতে চান তাহলে আমাকেও ফেলে দিবেন। আমিও পড়ে যাবো তাতে আমার দুঃখ নাই। যদি আপনারা ভালো কারণে ফেলে দেন অসুবিধা নাই। কিন্তু যুদ্ধাপরাধী এসে যদি আমাদের ফেলে দিতে চায় তাহলে… আর ফেলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যদি রক্তাক্ত একটা অবস্থার মুখোমুখি যদি হতে হয় তাহলে এটা কোনোভাবে দেশের জন্য সুখকর হবে না। আমার বক্তব্য হচ্ছে আপনারা অন্তত এক মাসের জন্য এটাকে(আন্দোলনকে) স্থগিত করেন। এবং প্রয়োজনে আমি আপনাদেরকে নিয়ে, যারা কোটা সংস্কার আন্দোলন করছেন, তাদের নেতৃবৃন্দ যারা প্রকৃত ছাত্র, তাদেরকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বসবো। বসে কথা বলবো যাতে একটা যৌক্তিক সমাধান করা যায়।
ছাত্রলীগের উদ্দেশে সায়েদুল হক সুমন বলেন, আপনারা যদি প্রকৃতঅর্থে কাউকে প্রতিহত করতে চান, দেখা যায় যদি এ আন্দোলনে বাইরে থেকে কেউ এসে সরকারের ক্ষতি করতে চায়, রাষ্ট্রের ক্ষতি করতে চায় তাদেরকে প্রসাশনের কাছে হস্তান্তর করবেন। নিজেরা আইন হাতে তুলে নিবেন না। আমি আপনাদের বড় ভাই হিসেবে বলছি। আর যারা আন্দোলন করছেন তাদেরও বড় ভাই আমি। আপনাদের বলবো আদালতের দিকে একটু দেখেন। একমাসের পরে যদি আপনাদের মনে হয় যদি যৌক্তিক সমাধান হয়নি তাহলে আবার আন্দোলন করতে পারবেন। কিন্তু অযথা মুখোমুখি হয়ে আমি চাই না আপনাদের ভবিষ্যত নষ্ট হোক এবং দেশে একটা বিশৃঙ্খল পারিস্থিতির তৈরি হোক। কারণ এরকম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে সরকারকে কিন্তু কঠিন হাতে আগাতে হবে।
এ সময় প্রয়োজনে কোটা সংস্কারের পক্ষে তিনি আদালতে আইনজীবী হিসেবে থাকার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এছাড়া গতকাল যারা আহত হয়েছেন সবাইতে পরিপূর্ণভাবে চিকিৎসা দিতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে এ সংসদ সদস্য বলেন, সে যেই হোন কেন কাউকে মারতে পারেন না। অনেকে অতি আবেগে এ কাজ করতে পারেন। এটা দলীয় সিদ্ধান্ত না। যারা মারে তারা প্রকৃত ছাত্রলীগ না।