এলইডিতে আলোকিত হবে নগরী
বন্দর নগরী চট্টগ্রামকে আলোকিত করতে ২৬০ কোটি ৮৯ লাখ ৮৭ হাজার টাকা ব্যয়ে এলইডি লাইটের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। ‘মডার্নাইজেশন অব সিটি স্ট্রিট লাইট সিস্টেম অ্যাট ডিফারেন্ট এরিয়া আন্ডার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন’ শীর্ষক প্রকল্পটির মাধ্যমে সড়কবাতির আলোয় নগরীকে আলোকিত করতে এ প্রকল্প হাতে নেয় চসিক। আগামী শনিবার নগরীর পাঁচ তারকা হোটেল রেডিসন ব্লুতে এ প্রকল্প নিয়ে ভারতের সাথে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত শুধুমাত্র সড়ককে আলোকিত করতে চট্টগ্রামে এত বড় প্রকল্প কখনো কেউ নেয়নি বলে জানান চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
চসিক সূত্রে জানা যায়, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করে ট্রাফিক এবং পথচারীদের জন্য কার্যকর ও টেকসই সড়কবাতির আলোয় নগরীকে আলোকিত করার অংশ হিসেবে চসিক এই প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়।
২০১৯ সালের ৯ জুলাই একনেক সভায় প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়া হয়। চট্টগ্রাম নগরীর ৪১ ওয়ার্ডের বিভিন্ন সড়কজুড়ে এলইডি লাইট লাগানোর এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ভারত সরকার ঋণ দিচ্ছে ২১৪ কোটি ৪৬ লাখ ৮২ হাজার টাকা এবং সরকারি তহবিল (জিওবি) থেকে দেয়া হচ্ছে ৪৬ কোটি ৪৩ লাখ ৫ হাজার টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষ হলে সিটি কর্পোরেশনের বিদ্যুৎ বিল কমে আসবে প্রায় অর্ধেকে। এছাড়া, বাতি নিয়ন্ত্রণের ৫০০ সুইচের বদলে হবে মাত্র চারটি কেন্দ্রীয় সার্ভার স্টেশন এবং এতে প্রায় সাড়ে ১২ লাখ টাকা সাশ্রয় হবে বলে জানায় চসিক।
নগরীর ১৯ নম্বর দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডের মিয়াখান সওদাগর পোল থেকে ইসহাক সওদাগর পোল পর্যন্ত সড়কের একপাশে এলইডি স্থাপনের জন্য খুঁটি বসাতে দেখা যায়।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে নগরীর ১৯ নম্বর দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. নূরুল আলম মিয়া বলেন, চট্টগ্রামকে আলোকিত করতে ২৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে পথচারীদের জন্য কার্যকর ও টেকসই সড়কবাতির আলোয় নগরীকে আলোকিত করার অংশ হিসেবে চসিক এই প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়। এ প্রকল্পের আওতায় এই ওয়ার্ডের মিয়াখান সওদাগর পোল থেকে ইসহাক সওদাগর পোল পর্যন্ত সড়কের একপাশে সড়কবাতি স্থাপনের জন্য খুঁটি স্থাপন করা হয়েছে। আগামী ৬ জুলাই প্রকল্পটির চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হওয়ার কথা রয়েছে। এরপর ওয়ার্ডের প্রতিটি সড়কে এই বাতি স্থাপন করা হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে কোন সড়ক আর অন্ধকার থাকবে না।
প্রকল্পের ডিপিপি অনুযায়ী, চট্টগ্রাম নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে ৫ ফুটের বেশি প্রশস্ততার ১০ কিলোমিটার সড়ক এলইডি বাতির আওতায় আসবে। বিদ্যুৎসাশ্রয়ী এ বাতি পাঁচ বছর পর্যন্ত জিরো রক্ষাণাবেক্ষণ খরচে চলবে। ওয়ার্ডগুলোতে ৪০, ৬০, ১০০ ও ২৫০ ওয়াটের মোট ২০ হাজার ৬০০টি এলইডি বাতি, ২০ হাজার ২৬৭টি জিআই পোল এবং ৫০৭টি কন্ট্রোল সুইচ বক্স বসানো হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বিদ্যুৎ বিল কমে যাওয়াসহ বাতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয়ভাবে চারটি সার্ভার স্টেশন স্থাপন করা হবে। পোলসহ (কেবল, সার্ভার) প্রতিটি এলইডি বাতি স্থাপনে ব্যয় ধরা হয় ১ লাখ ৯ হাজার টাকা।
জানতে চাইলে চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডের যেসব সড়ক এখনো আলোস্বল্পতায় ভুগছে তা দূর করতে এ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে আলো-আঁধারিতে চুরি, ছিনতাইসহ নানা ভোগান্তি থেকে সাধারণ মানুষ রক্ষা পাবে। নগরীর প্রধান ৪৪টি সড়কসহ ৪১ ওয়ার্ডের প্রতিটিতে ১০ কিলোমিটার সড়কে ৩৬ হাজার এলইডি বাতি বসানো হবে।