চট্টগ্রাম

ওসিকে কনুই দিয়ে ধাক্কা, সেই এএসআই চাকরিচ্যুত

চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবিরকে ধাক্কা মেরে আহত করা সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সন্তু শীলকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

রবিবার (২৩ জুন) বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) উপ-কমিশনার (ডিসি) আবদুল ওয়ারীশ।

তিনি বলেন, ‘গত বছরের ২০ এপ্রিল গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োজিত থেকে এএসআই সন্তু জনসম্মুখে কোতোয়ালি থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবিরককে ইচ্ছাকৃতভাবে ধাক্কা দেন এবং তার সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও অপেশাদারসূলভ আচরণ করেন। মামলায় এটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এ কারণে এএসআই সন্তুকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়।’

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২০ এপ্রিল ঈদ সামগ্রী বিতরণ করতে নগরের কোতোয়ালি থানার পাথরঘাটা এলাকায় যান তৎকালীন শিক্ষা উপমন্ত্রী ও চট্টগ্রাম-৯ আসনের সংসদ সদস্য মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তাঁর প্রটোকল হিসেবে পাশে থেকে তাঁকে নিয়ে যাচ্ছিলেন কোতোয়ালি থানার ওসি জাহিদুল কবির। এ সময় পেছন থেকে বাঁ হাতের কনুই দিয়ে ওসিকে সজোরে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন এএসআই সন্তু শীল। সঙ্গে সঙ্গেই ওসি দাঁড়িয়ে গিয়ে উপমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এ সময় ওসির সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন ওই দেহরক্ষী। তখন উপমন্ত্রী ওসিকে মঞ্চে যেতে বলেন। উপমন্ত্রী মঞ্চে ওঠার পর ওসি জাহিদুল সেখানে গিয়ে তাঁকে বিষয়টি খুলে বলেন। উপমন্ত্রী এ সময় ওসিকে এ বিষয়ে সিএমপি কমিশনারের কাছে অভিযোগ দিতে বলেন।

এ ঘটনায় ওই সময় নিজ থানায় জিডি করেন কোতোয়ালি থানার ওসি জাহিদুল কবির। পাশাপাশি তিনি সিএমপি কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। এরপর গত বছরের ২৫ এপ্রিল এক আদেশে তাকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়। একই দিন আলাদা আরেকটি আদেশে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের উপ-কমিশনার (এডিসি) আসিফ মহিউদ্দিনকে। তদন্তে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়। ২ মে পুলিশ সদর দপ্তরের এক আদেশে তাকে প্রশাসনিক কারণে সিএমপি থেকে খুলনা রেঞ্জে বদলি করা হয়।

রেঞ্জ কার্যালয় থেকে তাকে বাগেরহাট জেলা পুলিশে যোগদান করতে বলা হয়। এরপর জেলা পুলিশের নির্দেশে তিনি ফকিরহাট মডেল থানায় যোগ দেন। এরই মধ্যে পুলিশের বিভাগীয় অনুসন্ধানে তার বিরুদ্ধে ওঠা ওসিকে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেলে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার নির্দেশ দেয় সিএমপি। গত বছরের ১১ জুন সিএমপি অফিসিয়ালি চিঠি দিয়ে বাগেরহাট জেলা পুলিশকে বিষয়টি জানায়। সিএমপির চিঠি পেয়ে ফকিরহাট থানা পুলিশ তাকে ছাড়পত্র দিয়ে জেলা পুলিশ লাইন্সে যোগ দিতে বলে। কিন্তু নিজ হাতে সই দিয়ে ছাড়পত্র গ্রহণ করেও পরবর্তী সময়ে পুলিশ লাইন্সে যোগ দেননি এএসআই সন্তু।

এর আগেও তার বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানার সাবেক ওসি নেজাম উদ্দিন, পটিয়া থানার ওসি প্রিটন সরকার, বন্দর থানার সাবেক ওসি জাহিদুল কবিরের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ রয়েছে। ওসি নেজাম উদ্দিন তার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে জিডি করেছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *