দেশজুড়ে

কয়েক লাখ গাড়ির রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও ড্রাইভিং লাইসেন্স আটকা

স্মার্ট কার্ডের সংকটে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাচ্ছেন না হাজার হাজার ড্রাইভার। এতে করে অনেক ড্রাইভারের বিদেশ যাওয়াও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বিআরটিএ এক প্রজ্ঞাপন দিয়ে ই–লাইসেন্স অনলাইনে দেখানোর সুযোগ দিলেও যারা বিদেশ যাবেন তাদের ক্ষেত্রে এই অনলাইন লাইসেন্স কোনো কাজে আসছে না। সময়মতো স্মার্ট কার্ড না আসায় দেশের কয়েক লাখ গাড়ির রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও ড্রাইভারের লাইসেন্স আটকা পড়েছে। বিআরটিএ মাসের পর মাস ডেট বাড়িয়ে ড্রাইভার এবং গাড়ির রেজিস্ট্রেশন কার্ডের মেয়াদ বাড়ালেও সংকটের সুরাহা হচ্ছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বিরাজমান এই সংকট কবে শেষ হবে তা নিয়েও অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। পুরো বিষয়টির পেছনে দেশের ডলার সংকট বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

বিআরটিএর দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, একসময় হাতে লেখা ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং গাড়ির রেজিস্ট্রেশন বুক (ব্লু বুক) থাকলেও তা স্মার্ট কার্ডে পরিবর্তিত হয়েছে। বর্তমানে দেশে আর হাতে লেখা কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স বা গাড়ির ব্লু বুক নেই। বছরে গড়ে ৮ লাখের মতো স্মার্ট কার্ডের প্রয়োজন হয়। এক বছরেরও বেশি সময় কার্ড সরবরাহ না থাকায় বর্তমানে তা দ্বিগুণের বেশিতে গিয়ে ঠেকেছে। এর সাথে প্রতিদিনই হাজার হাজার নতুন আবেদন জমা পড়ছে। বিআরটিএর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে অন্তত ২৫ লাখ কার্ডের প্রয়োজনীয়তা তৈরি হয়েছে। সরবরাহকারী ঠিকাদার থেকে গত সাড়ে তিন বছরে ১৬ লাখ কার্ড পেয়েছে বিআরটিএ। এতে করে চাহিদা ও যোগানের বিস্তর ফারাক তৈরি হওয়ায় দেশে কার্ডের সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

বিআরটিএর পদস্থ একজন কর্মকর্তা জানান, ২০২০ সালের ২৯ জুলাই বাংলাদেশ সরকার ভারতীয় প্রতিষ্ঠান মাদ্রাজ সিকিউরিটি প্রিন্টার্স (এমএসপি) প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে ডুয়েল ইন্টারফেস পলিকার্বনেট স্মার্ট কার্ড তৈরির জন্য চুক্তি করে। চুক্তির দিন থেকে পরবর্তী তিন বছরে প্রতিষ্ঠানটি ২৪ লাখ কার্ড সরবরাহ করার কথা ছিল। চুক্তি অনুযায়ী ২০২৫ সালের ২৮ জুলাই পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি কাজ করার কথা। বছরে আট লাখ করে এই পাঁচ বছরে প্রতিষ্ঠানটি ৪০ লাখ কার্ড প্রিন্ট করে সরবরাহ করার কথা রয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি চুক্তির শর্ত পূরণ করতে পারেনি। সাড়ে তিন বছরে কার্ড দিয়েছে মাত্র ১৬ লাখ। যা বহু আগেই ফুরিয়ে গেছে। ফলে নতুন করে আর কোনো কার্ড পাওয়া যাচ্ছে না। এতে করে ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের স্মার্ট কার্ড সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

চট্টগ্রাম বিআরটিএ সূত্র জানায়, তাদের কাছে প্রায় ৩০ হাজার লাইসেন্সের আবেদন জমা পড়ে আছে। যেগুলো সরবরাহ করতে পারছে না। ঢাকা থেকে প্রিন্ট হয়ে আসলে এসব লাইসেন্স ড্রাইভারদের দেয়া ঠিকানায় পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা জানান, বহু এমপি মন্ত্রীর রিকুয়েস্টেও লাইসেন্স সরবরাহ দেওয়া যাচ্ছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *