পার্বত্য চট্টগ্রাম

কাপ্তাই লেকে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার বাঁশ

কার্গো ট্রলি দিয়ে কর্ণফুলী পার হত কাপ্তাইয়ের বাঁশ। ১৯৯৬ সালে নির্মাণের পর গত ৩৮ বছরে সংস্কার নেই কার্গো ট্রলির। ফলে কাপ্তাই লেকে ভেসে ভেসে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার বাঁশ। কাপ্তাই পিডিবির আওতায় কার্গো ট্রলির মাধ্যমে লেকের বাঁশ পারাপার বিঘ্নিত হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতিসহ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

জানা গেছে, পার্বত্যাঞ্চলের বাঁশসহ বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল কাপ্তাই লেক হয়ে কার্গো প্রণালীতে এসে জড়ো হয়। এরপর কার্গো ট্রলির মাধ্যমে তা কর্ণফুলী নদীতে পারাপার করা হয়ে থাকে। প্রতিষ্ঠার থেকেই এভাবে কাঁচা মালামাল পারাপার হচ্ছে। বাঁশসহ এসব কাঁচামাল রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, টেকনাফ, মিরসরাই, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।

এদিকে, বন বিভাগ ও কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষসহ সরকার নির্ধারিত রাজস্ব দিয়েই বাঁশসহ বিভিন্ন কাঁচামাল পরিবহন করছে ব্যবসায়ীরা। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে কার্গো ট্রলির যান্ত্রিক ত্রুটির সমস্যায় সমাধান না করে কোনমতে কাঁচামাল পারাপার করেছে কর্তৃপক্ষ। ফলে মালামাল পারাপারে ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি রয়েই গেছে। কার্গো ট্রলি ভাল থাকা অবস্থায় প্রতি ঘণ্টায় ১০-১২ ট্রলি বোঝাই বিভিন্ন কাঁচামাল পারাপার করা হত। বর্তমানে ঘণ্টায় ৩-৪ ট্রলি বোঝাই কাঁচামাল পার করতে বহু কষ্ট এবং মারাত্মক ঝুঁকি নিচ্ছেন চালকরা। কার্গো ট্রলি দিয়ে পারাপার কমে যাওয়ায় বাঁশ ব্যবসায়ীরা ঠিকমত মালামাল সরবরাহ করতে পারছেন না। ফলে নদী ও লেকে ভেসে কোটি টাকার বাঁশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে তারা ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

এলাকার বাঁশ ব্যবসায়ী আলহাজ্ব আব্দুল গফফার, মো. রাসেল প্রকাশ রাশু ও খোরশেদ আলম জানান, দীর্ঘ ৬ মাস ধরে বাঁশ এবং অন্যান্য মালামাল প্রয়োজনমত পারাপার করতে পারছি না। কার্গোতে যান্ত্রিক সমস্যার ফলে মালামাল আগের মত পারাপার করা যাচ্ছে না। কার্গো ট্রলি চলছে ধীর গতিতে। বাঁশ ও বিভিন্ন মালামাল সময়মত সরবরাহ করতে না পারায় নদী ও লেকে কোটি টাকার বাঁশ শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমাদের এখন পথে বসা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। আমরা বাঁশ পরিবহন করতে বন বিভাগকে ১৫ ভাগ এবং কার্গো ট্রলিকে টন প্রতি ২৫ টাকা রাজস্ব দিয়ে আসছি। আমরা চাই কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্গো ট্রলি কর্তৃপক্ষ দ্রুত যান্ত্রিক সমস্যা সমাধান করুক। এতে করে সরকার ও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় করতে পারবে।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুজ্জাহ কার্গোতে যান্ত্রিক সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘মেসার্স এন্টারপ্রাইজ ও জেবি নামে দুটি প্রতিষ্ঠান কার্গো ট্রলি সংস্কার করার কাজ পেয়েছে। মেরামতের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি আমরা বুঝে নিয়েছি। অতি দ্রুত সংস্কার কাজ করা শুরু করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *