চট্টগ্রাম

কালুরঘাটে নতুন সেতুর নকশায় প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি

কালুরঘাট নতুন সেতুর নকশা অনুমোদন হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীও সম্মতি দিয়েছেন। এখন একনেকে অনুমোদন হলেই নির্মাণকাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সেতুর ওপ্রান্তে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমেদের স্মরণসভায় এ কথা জানিয়েছেন মন্ত্রী।

বোয়ালখালী সিরাজুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজ মাঠে ওই স্মরণসভায় তিনি আরো বলেন, ‘আমি যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি, ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী এই ডিজাইনে সম্মতি দিয়েছেন। এটি একনেকে অনুমোদন হলে কাজ শুরু হবে ইনশাল্লাহ। প্রয়াত মোছলেম উদ্দিন আহমেদ ও মাঈনুদ্দীন খান বাদল কর্ণফুলী সেতুর জন্য অনেক দৌড়াদৌঁড়ি করেছেন। আমিও তাঁদেরকে একাজে সব সময় সহযোগিতা করেছি। সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিবের সাথে আমি বেশ কয়েক দফা কথা বলেছি। একটু অপেক্ষা করুন এটি হয়ে যাবে।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বসে যাওয়া পুরাতন গাড়ির মতো বিএনপিকে দেশি-বিদেশি অনেকে ঠেলেও স্টার্ট দিতে পারেনি। বিএনপির এই পুরাতন গাড়ি স্টার্ট দিতে হলে ব্যাটারি চেঞ্জ করতে হবে। কিন্তু তাদের ডেম হয়ে যাওয়া ব্যাটারিও থাকে লন্ডনে। এই ব্যাটারি ফেলে না দিলে বিএনপির রাজনীতির গাড়ি আর কখনো স্টার্ট হবে না। বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো, নেতৃত্বের পরিবর্তন ছাড়া আপনাদের এই দল এবং রাজনীতি আর কখনো সচল হবে না।

তিনি বলেন, এই পর্যন্ত ৭০ টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছে। জো বাইডেন চিঠি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে, বাংলাদেশ সরকারের সাথে তারা কাজ করতে চাই। তার ক’দিন পরে ঋষি সুনাক ও চিঠি দিয়েছেন অভিনন্দন জানিয়ে। জাতিসংঘের মহাসচিবও চিঠি লিখে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ইউরোপিয়ান কমিশনের সবাই অভিনন্দন জানিয়েছেন। এত অভিনন্দন বার্তা ইতিপূর্বে কখনো আসে নাই। সমস্ত পৃথিবী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে, এবং এই সরকারের সাথে কাজ করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছে। আর এগুলো দেখে মাথা খারাপ হয়ে বিএনপি কয়দিন কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে বসেছিল, কি করবে বুঝতে পারে নাই।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, এবার নির্বাচন নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছিল। প্রথমে ষড়যন্ত্র ছিল নির্বাচন যাতে না হয়, যখন সেটি ঠেকাতে পারেনি, তারপর ষড়যন্ত্র ছিল নির্বাচনের মধ্যে নাশকতা সৃষ্টি করে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা। সেটি যখন করতে পারেনি তারপর পরিকল্পনা ছিল নির্বাচন যাতে দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্য না হয়। সমস্ত পৃথিবী যখন অভিনন্দন জানাচ্ছে, তারপর বিএনপি বলল এখন আমরা লিফলেট বিতরণ করব। আপনারা লিফলেট বিতরণ করেন, পেট্রোল বোমা বিতরণ করতে যাবেন না। সেটা যদি করেন উচিত শিক্ষা আপনাদেরকে দেয়া হবে। দলের তরুণ কর্মীদের বলবো, বিএনপির কারা পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করার পরিকল্পনা করে, সেটা খুঁজে বের করুন। আমরা তাদেরকে এই কাজ করতে দিব না।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মিছিলের পেছনের সারির কর্মী থেকে তিনি নেতৃত্বের আসনে আসীন হয়েছিলেন। একজন কর্মী কিভাবে নেতা হতে পারেন সেটির উদাহরণ তিনি। আজকের নতুন প্রজন্ম যারা ৩০ বছর বয়স, তারা জানেনা বিরোধী দল কি, বিরোধী দলে থাকলে যন্ত্রণা কি, সেটি অনেকে বুঝতে পারে না। সমস্ত প্রতিকূলতাকে উপড়ে ফেলে মোছলেম উদ্দিনের মতো যারা জননেত্রী শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ডকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন আজকে ধীরে ধীরে তাদের অনেকে প্রয়াত হয়েছেন। পঁচাত্তরের পরে দম্ভ করে অনেকেই বলতো আওয়ামী লীগ কখনো ক্ষমতায় যাবে না। সেই সময় বুকে পাথর বেঁধে জিয়া এরশাদের সমস্ত দমন-নিপীড়ন ও রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে, নিজের জীবনকে বিপন্ন করে যারা এই সংগঠনকে গড়ে তুলেছেন এই চট্টগ্রামে তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন মোছলেম উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, মোছলেম উদ্দিন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের সময় যেই সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তা নতুন প্রজন্মের অনেকেই জানেন না। তিনি এবং আমাদের প্রয়াত আরেক নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী একসাথে যুদ্ধকালীন সময়ে পাকিস্তানীদের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। গ্রেপ্তার হবার পর তারা পাগলের অভিনয় করা শুরু করলেন। তখন পাকিস্তানিরা মনে করলো এরা পাগল। সেজন্য তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছিল। এবং ছাড়া পাওয়ার পর আবার মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেছিলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, এখন অনেকেই রেডিমেইড নেতা হতে চাই, অনেকে টাকা দিয়ে রাজনীতি কিনতে চাই, অনেকে রাতারাতি নেতা বনে যেতে চান, সেজন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নয়, টাকা দিয়ে রাজনীতি কেনা যায় বিএনপি-জাতীয় পার্টিতে, আওয়ামী লীগে নয়। অর্থ আর বৃত্তকে আমাদের দল মূল্যায়ন করে না, কর্মীর মূল্যায়ন করে।

বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাজা’র সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য মো. আবদুস ছালাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ দাশ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আব্দুল কাদের সুজন প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *