জাতীয়

কৃষিতে অস্ট্রেলিয়ার সহায়তা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদন বাড়াতে অস্ট্রেলিয়ার প্রযুক্তিগত সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। কারণ আমাদের জমি কমছে, আর মানুষ বাড়ছে। অস্ট্রেলিয়া এ ব্যাপারে আমাদের সাহায্য করতে পারে, কারণ অস্ট্রেলিয়া কৃষি প্রযুক্তিতে অনেক উন্নত।’

মঙ্গলবার বিকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে তার সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিনেটর পেনি ওং সৌজন্য সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ কৃষি উৎপাদনে সফল হয়েছে, কারণ গত ১৫ বছরে কৃষি উৎপাদন বহুগুণ বেড়েছে। তবে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশকে উৎপাদন আরও বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন।

এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্য আয়ের দেশে উত্তরণের পরও বাংলাদেশি পণ্যের জন্য ডিউটি ফ্রি, কোটা ফ্রি সুবিধা অব্যাহত রাখবে অস্ট্রেলিয়া। মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশ সফররত অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান। অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম আল্লামা সিদ্দিকী এবং ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নাদিয়া সিম্পসন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

২৬ বছরে এই প্রথম অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান এ সময় ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন ও ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য বাংলাদেশে আসা অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী গো হুইটল্যামকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। রোহিঙ্গাদের জন্য অস্ট্রেলিয়া সর্বোচ্চ সহযোগিতার জন্য তিনি পেনি ওংকে ধন্যবাদ জানান।

হাছান মাহমুদ জানান, আন্তরিকতাপূর্ণ বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি, বাংলাদেশের ১০০টি বিশেষ ইকনোমিক জোন এবং ৪০টি আইটি ভিলেজে অস্ট্রেলীয় বিনিয়োগ, বাংলাদেশিদের মৌসুমি কর্মসংস্থান, সেখানে প্রবাসীদের কল্যাণ, অবৈধ অভিবাসন রোধ, জ্বালানি ও পরিবেশ সংরক্ষণে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ার টেকনিক্যাল অ্যান্ড ফারদার এডুকেশন সহায়তার আওতায় বাংলাদেশের টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারগুলোতে উন্নত প্রশিক্ষণে সহযোগিতা কামনা করেছি। একই সঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ইউটিসির সঙ্গে আমাদের চট্টগ্রামের প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রেডিট ট্রান্সফার সুবিধা রয়েছে। এটি অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গত চার বছরে দু’দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে চার বিলিয়ন অস্ট্রেলীয় ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা আগামী পাঁচ বছরে দ্বিগুণ হবে বলে আশা করি।

অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং বলেন, সামাজিক, অর্থনৈতিক, পরিবেশ সংরক্ষণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে ব্যাপক উন্নতি করেছে, তা আরও এগিয়ে নিতে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের পাশে থাকতে চায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *