কোটা প্রথা সংবিধান বিরোধী, বৈধ করার কোনো উপায় নেই: জিএম কাদের
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ২৯ এর ১, ২ ও ৩ নম্বর ধারা যদি কেউ পড়েন, সেখানে দেখবেন এটি সম্পূর্ণ সংবিধান বিরোধী। এটি আমার কোনো কথা না।
সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে, বর্তমান সরকার এটা চাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু সেখানে হাত-পা বাঁধা। এসব ধারা পরিবর্তনের ক্ষমতা এ সংবিধানে দেওয়া হয়নি। সংবিধান অনুযায়ী এ কোটা প্রথা বৈধ করার কোনো উপায় নেই।
ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের কোটা প্রথার আন্দোলন বিষয়ে জিএম কাদের বলেন, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সম্মান করি। কিন্তু তাদের ছেলেরা, তাদের পরের প্রজন্ম কোটা প্রথার বিষয়ে খুব একটা নীতির মধ্যে আসে না। সবচেয়ে বড় কথা আমাদের দেশ সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এটা বাধা স্বরূপ হতে পারে।
শনিবার (০৬ জুলাই) গাজীপুর মহানগরের তেলিপাড়া এলাকায় সাগর-সৈকত কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত জাতীয় পার্টির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সেখানে জিএম কাদের বলেন, ২০১০ সালে দায়মুক্তির আইন করা হয়েছিল। দায়মুক্তিতে আওয়ামী লীগ চ্যাম্পিয়ন। বিদ্যুৎ খাতে দায়মুক্তি, জ্বালানী খাতে দায়মুক্তির কারণে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা পাচার হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশে রিজার্ভের অবস্থা খারাপ হচ্ছে। যার কারণে আমাদের গাড়ি চলতে পারছে না, চুলা জ্বলে না। আবার আইন হয়েছে যারা অবৈধ উপায়ে আয় করেছে তা দায়মুক্তি দিয়ে সাদা করা যাবে। এগুলো হলো চুরির দায়মুক্তি, অপরাধের দায়মুক্তি। এসব দায়মুক্তি দিয়ে দেশকে নর্দমায় ফেলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের বর্তমান অবস্থা ভালো না। সাধারণ মানুষ অনেক কষ্টে জীবন-যাপন করছে। জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে, মানুষের আয়-ইনকাম সেভাবে কমছে। জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, মজুরির দাম কমছে। ডলারের সঙ্গে আমাদের টাকার মানের অবমূল্যায়ন হচ্ছে। ডলারের দাম বেড়ে গেছে। দেশে পর্যাপ্ত ডলার নেই। আমাদের বিভিন্ন পণ্যের আমদানি ব্যয় বাড়ছে, সঙ্গে সঙ্গে রিজার্ভও কমে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও গাজীপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার মিয়া। সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মুজিবুল হক চুন্নু।
সেখানে আরও বক্তব্য রাখেন- জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, জাপা’র প্রেসিডিয়াম সদস্য শেরীফা কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. জহিরুল ইসলাম জহির, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মো. আরিফুর রহমান খান, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোহাম্মদ রাজু, জাপ’র ভাইস চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন, গাজীপুর মহানগর কমিটির আহ্বায়ক মো. শরিফুল ইসলাম প্রমুখ।