কোনো আমলকেই খাটো করে দেখা উচিত নয়
কোনো আমলকেই খাটো করে দেখা উচিত নয়কোনো আমলকেই খাটো করে দেখা উচিত নয় মানুষের উচিত দুনিয়ায় সৎ কাজের পরিমাণ বেশি করা, আর মন্দ কাজ কম করা।
ইবাদত-বন্দেগি ঠিক রেখে পার্থিব জীবনে যদি অপ্রতুলতা থাকে আর পরকালীন জীবনে থাকে স্বাচ্ছন্দ্য- তাহলে কোনো ক্ষতি নেই।
যে রিজিক ও সম্পদ আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার সম্ভাবনা নেই, তাতে কোনো কল্যাণ নেই।
ইবাদত-বন্দেগির ফজিলত, সৎ কাজের মহত্ত্ব ও মর্যাদার কারণে আল্লাহতায়ালা বান্দার জীবিকার দায়িত্ব নিজেই গ্রহণ করেছেন। এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমার ইবাদত করার জন্যই আমি মানব ও জিনজাতি সৃষ্টি করেছি। আমি তাদের কাছে জীবিকা চাই না এবং এটাও চাই না যে, তারা আমাকে আহার্য জোগাবে। আল্লাহতায়ালাই তো জীবিকাদাতা, শক্তির আধার, পরাক্রান্ত। ’ –সূরা জারিয়াত ৫৬-৫৮
জীবিকা অর্জনের জন্য হালাল মাধ্যম গ্রহণ করা বৈধ হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহতায়ালা এ বিষয়টির দিকে আহ্বান জানিয়েছেন। একজন মুসলমানের চিন্তাচেতনা ও অভিপ্রায় হবে সৎ ও নেক কাজ করা, যার মাধ্যমে আল্লাহ তাকে রহম ও দয়া করবেন, জান্নাত দান করবেন এবং জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্ত করবেন।
এ জন্য হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) দোয়া করতেন, ‘হে আল্লাহ! আমাদের দ্বীনের মাঝে কোনো সমস্যা ও মসিবত রেখো না। দুনিয়াকে আমাদের প্রধান চিন্তার বিষয় কোরো না এবং আমাদের ইলম অর্জনের লক্ষ্য বানিও না। ’ –তিরমিজি
অতএব জান্নাতে যেতে সর্বপ্রধান যে আমল তা হচ্ছে, আল্লাহতায়ালার একত্ববাদের ঘোষণা এবং ইবাদতের মাঝে সব ধরনের শিরক থেকে বেঁচে থাকা। সেই সঙ্গে সঙ্গে ফরজ ইবাদতগুলো আদায়ের পাশাপাশি জুলুম থেকে বেঁচে থাকা এবং মানুষের অধিকার পূরণ করা।
ফরজ ও ওয়াজিব আমল করা এবং হারাম থেকে বাঁচার পর অধিক পরিমাণে মুস্তাহাব ও ফজিলতপূর্ণ আমল বান্দার মর্যাদা বৃদ্ধি করে। বান্দা হয় কল্যাণপ্রাপ্ত এবং গোনাহমুক্ত।
ইসলামের শিক্ষা হলো, ছোটবড় কোনো উত্তম কাজকেই খাটো করে দেখা উচিত নয়। নৈকট্য অর্জনের ক্ষেত্রে কোনো নেক ও সৎ আমলকে তুচ্ছ করে দেখা ঠিক নয়। কারণ জানা নেই, কোন আমলের দ্বারা পাল্লা ভারি হয়ে যাবে এবং গোনাহ মাফ হবে।
কল্যাণের দিক তো অনেক। তাই পরকালীন শান্তি ও সফলতার জন্য এগুলো বাস্তবায়নে অগ্রগামী হওয়া প্রয়োজন।
এসব আমলের মাঝে একটি হচ্ছে নামাজের পর মাসনূন জিকিরসমূহ আদায় করা। আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করা। দুনিয়া ও আখেরাতের সব কল্যাণের সমন্বয় হচ্ছে দোয়া।
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘দোয়া সব ইবাদতের মূল। ’ –তিরমিজি
কারণ দোয়ার ক্ষেত্রে হৃদয় ভরসা করে একমাত্র আল্লাহর ওপর এবং পালনকর্তার সঙ্গেই সম্পর্ক থাকে। তখন আর কারও দিকে দৃষ্টি যায় না। দোয়াকারী দোয়ার সময় আল্লাহর সঙ্গে আর কাউকে শরিক করে না। যে ব্যক্তি সর্বদা আল্লাহর কাছে দোয়া প্রার্থনা করে, তার সব চাহিদা পূরণ হয়। তার শেষ পরিণতি শুভ হয়। তার দ্বীন-ধর্ম ঠিক থাকে।
আর যে আল্লাহকে ছাড়া অন্য কারও কাছে চায়, সে হয় ক্ষতিগ্রস্ত, লজ্জিত এবং অপমানিত।
অধিক পরিমাণে দরূদ পাঠেও বান্দার গোনাহ মাফ হয়, প্রয়োজন পূরণ হয়। একবার দরূদ পাঠে আল্লাহতায়ালা তার ওপর ১০ বার রহমত নাজিল করেন।
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আমার ওপর অধিক পরিমাণে দরূদ পাঠকারী কিয়ামতের মাঠে আমার অতি নিকটবর্তী হবে। ’ –তিরমিজি
নেক আমলের সঙ্গে সঙ্গে জাহান্নাম অপরিহার্য হয় এমন আমল থেকে বেঁচে থাকতে হবে। এ জাতীয় আমলের মাঝে সবচেয়ে ভয়ংকর হলো- আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করা। এছাড়া কবিরা গোনাহের মধ্যে রয়েছে নামাজ ত্যাগ করা, অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যা করা, ব্যভিচার করা, মিথ্যা ও অযাচিত কথা বলা।
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা গোনাহকে তুচ্ছ ভাবা থেকে বেঁচে থাকো। কারণ এ তুচ্ছ গোনাহই একত্রিত হতে হতে মানুষকে ধ্বংস করে দেয়। ’