কোন ধরনের আগুন কীভাবে নেভাবেন
ঢাকার বেইলি রোডের পর চট্টগ্রামে পরপর বড় দুটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে গেছে। এতে হতাহত না থাকলেও আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়েছে ফায়ার সার্ভিসকে। ১৮ ঘণ্টায়ও নেভানো যায়নি আগুন। কপাল মন্দ হলে এমন অগ্নিকাণ্ডের সম্মুখীন হতে পারেন আপনিও। তাই জেনে নিন, কোন ধরনের আগুন কীভাবে নেভাবেন। কারণ, সব আগুন পানিতে নিভে না।
ফায়ার সার্ভিস বলছে, আগুন পাঁচ ধরনের। তাঁরা এ, বি, সি, ডি ও ই পাঁচটি ক্যাটাগরিতে আগুনের ধরনকে ব্যাখা করেছেন। এ-পুড়ে ছাই বা কয়লা হয়ে যায় এমন আগুন, বি-তেলের আগুন, সি-গ্যাসের আগুন, ডি-ধাতব পদার্থের আগুন, ই-ইলেকট্রিক আগুন। ক্যাটাগরি মনে রাখার প্রয়োজন না পড়লেও আগুনের ধরনের বিষয় মাথায় গেঁথে রাখা খুবই জরুরি। কেননা, আগুনের ধরনের ওপর নির্ভর করে আপনার তড়িৎ গতিতে ব্যবস্থা নিতে হতে পারে। তাৎক্ষণিক সঠিক ব্যবস্থাই বাঁচাতে পারে বড় ধরনের অগ্নিদুর্ঘটনা থেকে।
পুড়ে ছাই বা কয়লা হয় এমন আগুন: এ ধরনের সূত্রপাত সাধারণত হয় চুলা থেকে। কাঠ,কয়লা দিয়ে যেসব চুলা জ্বালানো হয় সেখান থেকে এই আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ ধরনের আগুন নেভানোর জন্য পানি, শুকনো বালি এবং ভেজা বস্তা দিয়ে নেভাতে হবে।
তেলের আগুন: কোন অগ্নিকাণ্ড যদি তেল থেকে হয় তাহলে সেটা নেভাতে ফোম ব্যবহার করা হয়। ফায়ার সার্ভিস বলছে কেমিক্যাল মিশ্রিত ফোম এক্ষেত্রে বেশি কার্যকরী। তবে এটা সময়সাপেক্ষ। তাই ভেজা বস্তা বা কাঁথা দিয়ে এই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।
গ্যাস থেকে আগুন: বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাসাবাড়িতে গ্যাস থেকে আগুন ধরলে প্রথমেই চেষ্টা করতে হবে গ্যাসের লাইন বন্ধ করার জন্য। এর পর বস্তা বা পানি দিয়ে বারি দিতে হবে। এতে করে বাতাস বন্ধ হয়ে যাবে।
ধাতব পদার্থের আগুন: ধাতব পদার্থের আগুন নেভাতে পানি দেয়া যাবে না। এক্ষেত্রে শুকনা বালি দিয়ে তাপ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
বৈদ্যুতিক গোলযোগের আগুন: ইলেকট্রিক শর্টসার্কিট বা গোলযোগ থেকে আগুন ধরলে পানি ব্যবহার করতে বেশ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। পানি ছুঁড়ে বা কাটা কাটা ভাবে দিতে হবে যাতে করে আপনার সাথে পানির কোন ছোঁয়া না থাকে। কারণ যে ব্যক্তি পানি দেবেন পানির সঙ্গে তার ছোঁয়া লাগলেই তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হবেন।
সুতরাং অগ্নিকাণ্ডে সবার আগে ইলেকট্রিসিটির লাইনটা বন্ধ করার চেষ্টা করতে হবে। বৈদ্যুতিক গোলযোগেরে আগুন নেভাতে দরকার কার্বন ডাই অক্সাইড। এক্ষেত্রে এবিসিই ড্রাই পাউডার ব্যবহার করা হয়”।
রাসায়নিক থেকে সৃষ্ট আগুন: রাসায়নিক থেকে সৃষ্ট আগুন খুব সতর্কতার সঙ্গে নেভাতে হয়। রাসায়নিকের মধ্যে নানা রকমের উপাদান রয়েছে। তাই ফায়ার সার্ভিসকে ঘটনাস্থলে যেয়ে পর্যবেক্ষণ করে পদ্ধতি বের করতে হয়। তবে প্রাথমিক ভাবে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস এবং কুয়াশা আকারে পানি দিয়ে নেভানো যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের সাহায্য নিতে হবে।