ক্রেতা সেজে প্রতারণা, তরুণী গ্রেপ্তার
রাজধানীর তেজগাঁও মোবাইল ব্যাংকিং-এর নামে প্রতারণার অভিযোগে ভাবনা আক্তার (২১) নামে এক তরুণীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তেজগাঁও থানার কাওরান বাজার বেলপট্টি মোড়ের রেলওয়ে মাকের্ট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শুক্রবার তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, গ্রেপ্তার ভাবনা কিশোরগঞ্জের নিকলী থানার গুরই উত্তর হাঁটি গ্রামের সরোয়ার সরদারের মেয়ে।
ভাবনা একজন প্রতারক। তার গ্রুপে নারীসহ আরও কয়েকজন সদস্য আছেন। তারা মূলত মোবাইল ব্যাংকিং-এর বিভিন্ন এজেন্টের সঙ্গে প্রতারণা করেন তিনি। তাদের গ্রুপের একজন নারী সদস্য প্রথমে একটি দোকানে যান। সেখানে একটি নম্বর বলে তাতে টাকা পাঠাতে বলেন। টাকা পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গেই গ্রুপের আরেক সদস্য কার্ড কিনতে আসেন। দোকানদার কার্ড দিতে একটু নিচু হলে বা অন্যমনস্ক হলেই তারা তখন নিজেদের মধ্যে মোবাইল ফোন পরিবর্তন করে ফেলেন! এরপর কার্ড নিয়ে অপর সদস্য চলে গেলে টাকা আসেনি বলে দাবি করতে থাকেন ওই নারী সদস্য। পরে নিজের মোবাইলও দেখান। এখানে উল্লেখ্য, তারা একই ধরনের দুটি মোবাইল ফোন সেট রাখে এবং দুটি সিম নম্বরই থাকে প্রায় একই, শুধু একটি ডিজিটই আলাদা হয়। দোকানদার পরে ওই মোবাইল চেক করেন এবং দেখেন একটি ডিজিট ভুল হয়েছে ও টাকা অন্য নম্বরে চলে গেছে। এটা নিজের ভুল মনে করে পরে পুরো টাকা আবার ফেরত দিয়ে দেন অথবা আবারও পাঠিয়ে দেন।
ভাবনা এই প্রতারক চক্রের প্রধান। তিনিই মূলত বিভিন্ন এজেন্টের কাছে ক্রেতা সেজে যান। শুক্রবার কাওরান বাজার আনিশা এন্টারপ্রাইজ মোবাইল ব্যাংকিং- এর দোকানে গিয়ে ১১ হাজার ৫০০ টাকা নগদে দিতে বলেন। দোকানদার কথামতো টাকা ক্যাশইন করেন। এ সময় ভাবনার গ্রুপের আরেকজন এসে বাংলালিংকের রিচার্জ কার্ড দিতে বলেন। দোকানদার কার্ড দিলে ওই ব্যক্তি চলে যান। এদিকে তখন ভাবনা বলেন, ভাই এখনও আমার মোবাইলে ক্যাশইন হয় নাই। তখন দোকানদার ভাবনার মোবাইল নিয়ে দেখেন যে, ০১৮৮৬-৯৫৯৩৭৯ নম্বরের পরিবর্তে ০১৮৮৬-৮৫৯৩৭৯ নাম্বারে টাকা ক্যাশইন হয়েছে। তখন ভাবনা টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চিৎকার শুরু করেন। পরে আশপাশের লোকজন জড়ো হলে দোকানে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হয়। তাতে দেখা যায়, ক্রেতা সেজে কার্ড কিনতে আসা গ্রুপের আরেক সদস্যের কাছে ভাবনা কৌশলে ক্যাশইন করা ০১৮৮৬-৮৫৯৩৭৯ নম্বরের মোবাইল ফোনটি পরিবর্তন করে একই রং ও মডেলের ০১৮৮৬-৯৫৯৩৭৯ নম্বরের নিয়ে নেন। সিসি ক্যামেরায় এই প্রতারণা দেখার পর তারা ভাবনাকে আটক করে পুলিশকে জানালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ পর্যন্ত শতাধিক এমন প্রতারণার ঘটনা তারা ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন ভাবনা। তারা ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর, সাভার, নারায়ণগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী এলাকায় এই ধরনের প্রতারণা করে থাকেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।