চট্টগ্রামপার্বত্য চট্টগ্রাম

খড়ের সিলিন্ডারে মাশরুম চাষ

খড়ের সিলিন্ডার হতে মাশরুম চাষকরে স্বাবলম্বী রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গা ইউনিয়নের বাসিন্দা অনিল মারমা।

এলএলবি সম্পন্ন করে বেকার বসে না থেকে শখের বসে পরীক্ষামূলক মাশরুম চাষ শুরু করেন তিনি। শুরুতেই সফলতা পেয়েছেন অনিল মারমা। ৩ বছর আগে কাপ্তাই উপজেলার বড়ইছড়িস্থ নিজ বাড়িতে তিনি মাশরুম চাষ শুরু করেন। অনিল মারমা বলেন, লেখাপড়া করেছি কোন চাকরি নেই। সিদ্ধান্ত নিলাম বসে না থেকে অবসর সময়টি মাশরুম চাষ করার। মাশরুম চাষ বিষয়ে ভালো আরো কিছু জানার জন্য মাগুরা জেলার ড্রিম মাশরুম সেন্টার ও ঢাকা সাভারে আমি প্রশিক্ষণ নিই। প্রশিক্ষণ শেষে আমি বাসায় একটি শেড বানিয়ে মাশরুম চাষ করি। খড়ের সিলিন্ডার বানিয়ে এই চাষ শুরু হয়। একটি শেডে একহাজার মাশরুম চাষের খড়ের সিলিন্ডার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন।

তিনি জানান, গত ৪ মাসে খড়ের সিলিন্ডার হতে মাশরুম উৎপাদন করেন প্রায় ৩শ’ কেজি। প্রতি কেজি মাশরুম ৩৫০ টাকা করে বিক্রয় করেছেন। এযাবৎ মাশরুম চাষে তার ব্যয় হয়েছে প্রায় ১ লাখ টাকা। তবে ইতিমধ্যে তার আয় হয়েছে প্রায় ৩ লাখ টাকা। কোন কোন সময় তার চাষে ৫/৬ জন শ্রমিক কাজ করে তারাও লাভবান হচ্ছেন। স্থানীয় ৩০ জন বেকার যুবক-যুবতীদের মাশরুম চাষে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন তিনি। আগামীতে মাশরুম চাষটি আরো বড় পরিসরে করার পরিকল্পনা আছে বলে জানান অনিল মারমা। তার এ কাজে তাকে কাপ্তাই উপজেলা কৃষি বিভাগ সার্বিক সহযোগিতা করেছে বলেও জানান তিনি। এদিকে অনিল মারমা কেবল মাশরুম চাষে সীমাবদ্ধ থাকেননি বরং মাশরুম চাষের পাশাপাশি তিনি তৃতীয় প্রজন্মের ধানের মাদার উৎপাদন করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি মাশরুম চাষে ব্যাপক সফলতার মাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি করবেন বলে আশা করছেন।

কাপ্তাই উপজেলা কৃষি অফিসার মো. ইমরান আহামেদ জানান, বর্তমানে দেশে বিদেশে মাশরুম চাষ দিনদিন অনেক জনপ্রিয় হচ্ছে। অনিল মারমার মতো যদি অন্যরাও এই মাশরুম চাষে কাজ শুরু করে, তবে অনেকেই এতে স্বাবলম্বী হতে পারবে। কেননা মাশরুমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এবং অন্যান্য কিছুর তুলনায় মাশরুমের কদরটা অনেক বেশি। এছাড়া অনিল মারমাকে মাশরুম চাষে কৃষি বিভাগ সহযোগিতা করে যাচ্ছে। অনিল মারমার মাশরুম চাষের আরো সফলতা কামনা করেছেন।

মাশরুম সিলিন্ডার বানানো নিয়ম: প্রথমে খড়গুলো ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ১ ঘণ্টা সেদ্ধ করতে হয়। এরপর আধাভেজা খড়গুলোতে মাশরুম বীজ দেওয়া হয়। পরে বড় পলিথিন মুড়িয়ে সিলিন্ডার তৈরি করা হয়। বীজগুলো যখন সিলিন্ডারের ভেতর থেকে বাহির হয় তখন প্রতিটি সিলিন্ডারে আটটি করে ছিদ্র করে দেয়া হয়। একটির ওপর একটি খড়ের সিলিন্ডার বসিয়ে সেড তৈরি করা হয়। এভাবে তৈরি হয় মাশরুম সিলিন্ডার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *