খাগড়াছড়িতে কৃত্রিম আলোয় ড্রাগন চাষে সাফল্য
খাগড়াছড়িতে কৃত্রিম আলোর মাধ্যমে ড্রাগন ফল উৎপাদন করে সাফল্য পেয়েছে কৃষক। মৌসুম ছাড়া অসমেয় ড্রাগন উৎপাদন করে ভালো দাম পাওয়ায় খুশি তারা। নয়া এই প্রযুক্তির মাধ্যমে সারাবছরই উৎপাদন সম্ভব বলছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা।
জেলার মাইসছড়িতে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উঁচু পাহাড়ের ঢালু অংশে শত শত ড্রাগন গাছ। প্রতিটি গাছের সাথে রয়েছে বৈদ্যুতিক লাইট। কৃত্রিম আলো প্রয়োগ করে মৌসুম ছাড়া ড্রাগন উৎপাদন করে সাফল্যও পাচ্ছেন কৃষকরা। খাগড়াছড়ি এগ্রো ফার্মের ১২ হাজার গাছের বাগানে প্রায় আড়াই হাজার বাল্ব দিয়ে আলো প্রয়োগ করে ড্রাগন উৎপাদন করা হচ্ছে।
ফার্মের কৃষক মোহাম্মদ জুলহাস বলেন, চীন থেকে বাল্ব এনে ড্রাগন বাগানে স্থাপন করা হয়েছে। সাধারণত ৬ মাস ড্রাগন পাওয়া যায়। আলো প্রয়োগ করে ১০ মাস ড্রাগন উৎপাদন করা যায়। এই সময়ে সাধারণত বাজারে ড্রাগন থাকে না। বাজারে প্রতিকেজি সাড়ে ৩শ থেকে ৪শ টাকায় বিক্রি করা যায়।
নয়া প্রযুক্তিতে রাতের বেলায় অতিরিক্ত আলো প্রয়োগ করে ড্রাগন উৎপাদন করা যায় বলে মত দিয়েছেন কৃষি গবেষকরা। বিদেশ থেকে আমদানিকৃত বাল্ব ব্যবহার করায় উৎপাদন খরচও কমেছে।
ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ে এর প্রয়োগ শুরু হয়েছে বলে জানান খাগড়াছড়ির পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আলতাফ হোসেন। তিনি আরো বলেন, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট পরীক্ষামূলকভাবে এই পদ্ধতি ব্যবহার করেছে। কৃষকরাও এর ব্যবহার শুরু করেছে। অফ সিজনে ড্রাগন উৎপাদন করা গেলে বিদেশ থেকে আমদানি নির্ভরতাও কমবে। সারা বছরই ড্রাগন উৎপাদন করা যাবে।
পার্বত্য এলাকায় ড্রাগন চাষ সম্প্রসারণে কাজ করছে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ। চলতি মৌসুমে খাগড়াছড়িতে ৫৫ হেক্টর জমিতে ড্রাগন চাষ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উপ পরিচালক কিশোর কুমার মজুমদার।
তিনি আরো বলেন, বছরব্যাপী ফল উৎপাদন ও পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ড্রাগনের চাষাবাদ শুরু হয়েছে। এখন ব্যাপকভাবে চাষাবাদ হচ্ছে। লাভজনক হওয়ায় প্রতিবছরই ড্রাগন চাষ সম্প্রসারিত হচ্ছে। কৃষকদের আমরা প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছি। ২০২২–২৩ অর্থবছরে ২শ ৫৪ মেট্রিক টন ড্রাগন উৎপাদন হয়েছে বলে জানান তিনি।