গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ে পৃথক সেল গঠন করা হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের জেনোসাইডের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জাতিসংঘে দেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও গবেষকদের নিয়ে একটি পৃথক সেল গঠন করা হবে। এই সেলের মাধ্যমে সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া হবে। তিনি বলেছেন, জামায়াতে ইসলামীসহ স্বাধীনতাবিরোধীদের নিয়ে জোট গঠন করে বিএনপি তাদের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত না করলে বাংলাদেশের জেনোসাইড অনেক আগেই স্বীকৃতি পেত।
রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে গতকাল রবিবার বিকালে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত ‘বাংলাদেশে জেনোসাইড : আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও ক্ষতিপূরণ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডিক্যাব সভাপতি নূরুল ইসলাম হাসিবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান অপুর সঞ্চালনায় জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন এমপি বিশেষ অতিথির বক্তৃতা দেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রুয়ান্ডা, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম ও আরো দেশগুলো জেনোসাইড স্বীকৃতি পেয়েছে। সে দেশগুলোতে আমাদের মতো ৩০ লাখ নয়, তিন থেকে চার লাখ মানুষ মারা গেছে। আমাদের এখানে জেনোসাইড স্বীকৃতি না পাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে, যারা মুক্তিযুদ্ধ চায়নি, সেই অপশক্তিকে নিয়ে রাজনীতি করার প্রবণতা এবং জামায়াতে ইসলামীসহ যারা স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ছিল তাদের নিয়ে জোট গঠন করে রাজনীতিতে তাদের পুণর্বাসিত করা। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করার প্রবণতা, গণহত্যাসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাকে আড়াল করার প্রবণতা-এগুলো না থাকলে বাংলাদেশের জেনোসাইড অনেক আগেই স্বীকৃতি পেত।
সমসাময়িক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারির সুষ্ঠু নির্বাচনের পর বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশ ও ৩২টি আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে। আমি দেখলাম, এখন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলছেন-তাদের কৌশলে নির্বাচনের বাইরে রাখা হয়েছে। আমরা সব সময় তাদের নির্বাচনে আসতে বলেছি আর তারা নির্বাচন ভন্ডুলের অপচেষ্টা করেছে। কিন্তু এখন তারা স্বীকার করছে নির্বাচনে অংশ না নেয়া তাদের বিরাট ভুল ছিল।
ইন্ডিপেন্ডেন্স ডিপ্লোম্যাটিক কাপ টেনিস টুর্নামেন্টের পুরস্কার বিতরণ : ১৩টি দেশ ও সংস্থা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ মোট ১৫টি দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত ইন্ডিপেন্ডেন্স ডিপ্লোম্যাটিক কাপ টেনিস টুর্নামেন্টের প্রথম আসরের পুরস্কার বিতরণ করেছেন প্রধান অতিথি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় গতকাল রবিবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথি পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার, অস্ট্রেলিয়ার এক্টিং হাইকমিশনার নার্দিয়া সিম্পসন প্রমুখ।
এ টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন সুইডেন ও রানার্স আপ ডেনমার্কের দলসহ প্রতিযোগীদেরকে মেডেল ও পুরস্কার তুলে দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড়ের পুরস্কারে ভূষিত হন।