গরুর দামে ছাগল!
লম্বা কান। বড় বড় শিং। মায়াবী চোখ। সাদা, কালো, বাদামি রং।
কোনোটার গলায় উজ্জ্বল রঙের দামি বেল্ট। কাঁঠাল পাতা দেখলেই ছাগল হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। লাফিয়ে উঠছে। এমন আদুরে সব ছাগল দেখলেই ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছে করে কিশোর-তরুণদের। যে ছাগল যত বড়, যত বেশি সুন্দর তার কদরও বেশি কোরবানির পশুর হাটে।
নগরের পোস্তারপাড়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) অনুমোদিত স্থায়ী ছাগলের বাজারের চিত্র এটি। হাজারো ছাগল। হাজারো ক্রেতা-বিক্রেতা। দরকষাকষি চলছে। বাড়ছে বেচাকেনাও।
দেওয়ানহাট দিয়ে পোস্তারপাড় ছাগলের বাজারে ঢুকতেই বিশাল তোরণ সাজানো হয়েছে ক্রেতাদের স্বাগত জানিয়ে। সেখানেই কয়েকজনের জটলা। জানা গেল একটি ছাগল বিক্রি হলো ১৩ হাজারে।
ক্রেতা সালামত উল্লাহ জানান, ছোট গরুর দামে বড় ছাগল বিক্রি হচ্ছে। সব জিনিসের দাম বাড়তি। স্বাভাবিকভাবে ছাগলের দামও বাড়তি হবে। সামর্থ্য অনুযায়ী এ ছাগলটি কিনলাম।
একটু ভেতরে ঢুকতেই চট্টগ্রামের একমাত্র ছাগলের বাজারটি। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছাগলের মেলা বসেছে যেন। ব্ল্যাক বেঙ্গল, যমুনাপারি থেকে শুরু করে যত জাত উপজাতের ছাগল আছে সবই আছে এ বাজারে। শুধু ছাগল নয়, প্রচুর ভেড়াও আছে। বেপারীদের আলাদা আলাদা খুপরি আছে ছাগলের। এর বাইরে শখের বশে লালন-পালন করা গৃহস্থের ছাগলও প্রচুর। যদিও কোরবানির বাজারে ভেড়ার কদর কিছুটা কম।
ভিড়ের বাইরে কিছুটা নিরিবিলিতে বড় যমুনাপারি ছাগল নিয়ে বসে ছিলেন আবদুর রহমান। দুই তরুণ এসে পছন্দ করলেন ছাগলটি। দাম হাঁকলেন ৫০ হাজার। দাম উঠলো ২৫ হাজার। এ যাত্রায় বিক্রি হয়নি ছাগলটি।
আবদুর রহমান জানান, আরও দুই দিন বাকি আছে কোরবানির। কম দামে বেচবো কেন! একটি ছাগল পালতে অনেক খরচ।
বাঁশখালীর একজন বিক্রেতা চার বছর লালনপালন করে ৮৫ কেজি ওজনের যমুনাপারি ছাগল নিয়ে এসেছেন পোস্তারপাড় ছাগলের হাটে। তিনি দাম হাঁকিয়েছেন ৭০ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত দর উঠেঠে ৪০ হাজার টাকা।
নাটোর, পাবনা, নোয়াখালী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, খুলনা, যশোর, পার্বত্যজেলা, চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে বেপারীরা ছাগল আনেন এ বাজারে। কেউ ২০টি, কেউ ৫০টি থেকে শুরু করে ২০০টি পর্যন্ত ছাগল আনেন একেকজন বেপারী। শুধু কোরবানির ঈদ নয়, সারাবছরই এখানে ছাগল বেচাকেনা চলে। প্রতিদিন প্রচুর ছাগল জবাইও হয় এখানে।
হাসিল আদায়কারীরা জানান, সুন্দর পরিবেশে ছাগল বিক্রি হচ্ছে পোস্তারপাড় ছাগলের বাজারে। মাইকিং করে ক্রেতা-বিক্রেতাদের আমরা সতর্ক করছি অপরিচিত লোকের দেওয়া কিছু না খেতে বা পান করতে। জাল নোটের বিষয়ে সতর্ক থাকতে।