আন্তর্জাতিক

গাজাগামী ত্রাণবাহী গাড়িতে আক্রমণ করছে ইসরায়েলিরা

গাজায় অনেক ধরনের যুদ্ধ চলছে। তার মধ্যে একটি হলো সাহায্য নিয়ে যুদ্ধ। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ত্রাণবাহী গাড়ি প্রবেশে বাধা এবং ভাঙচুরের ছবি ভেসে বেড়াচ্ছে।

ফিলিস্তিনিদের জন্য পাঠানো ত্রাণবাহী ট্রাক আটকে দিচ্ছে কট্টরপন্থি ইসরায়েলিরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ট্রাক থামিয়ে স্লোগান দিচ্ছে তারা। এমনকি ট্রাক থেকে খাবার তুলে নিয়ে রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলা হচ্ছে।

কট্টরপন্থি ইসরায়েলিরা বলছেন, সাহায্য বন্ধ করা গুরুত্বপূর্ণ। এটা একমাত্র উপায় যেভাবে আমরা জিতব। আমাদের জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার একমাত্র উপায়।

তাদের অনেকের দাবি, ইসরায়েলি জিম্মিদের বন্দি থাকা অবস্থায় গাজাবাসীদের কিছুই পাওয়া উচিত নয় এবং গাজাকে সহায়তা দিলে যুদ্ধ কেবল দীর্ঘায়িত হবে।

একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, একদল উচ্ছ্বসিত বিক্ষোভকারী লুট করা লরির ওপর নৃত্য করছে। অন্যরা আটকা পড়া লরিগুলোতে একের পর এক আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে।

অন্যান্য ভিডিওতে দেখা গেছে, ইসরায়েলিরা জেরুজালেমে লরি থামিয়ে দিচ্ছে এবং চালকদের কাগজপত্র দেখাতে দাবি করছে, তারা গাজায় সাহায্য পরিবহন যেতে দিচ্ছে না। পশ্চিম তীরে গাজার উদ্দেশে পণ্য বহনকারী কমপক্ষে দুই চালককে তাদের ক্যাব থেকে টেনে নিয়ে মারধর করা হয়।

ফিলিস্তিনি লরি চালকরা বলছেন, ইসরায়েলিদের এমন কর্মকাণ্ডে তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।

আদেল আমরো নামে এক চালক বিবিসিকে বলেন, আমি ক্রসিং পয়েন্টে পৌঁছতে ভয় পাচ্ছি। আমি আমার জীবনের জন্য ভয় পাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা এখন প্রধান সড়ক থেকে অনেক দূরে পাশের সড়ক নিচ্ছি, কারণ আমরা বসতি স্থাপনকারীদের আগ্রাসনকে ভয় পাই।

এদিকে পিস অ্যাক্টিভিস্টরা সোশ্যাল মিডিয়াতে তাদের বিরোধীদের গতিবিধি ট্র্যাক করতে এবং মূল ক্রসিং পয়েন্টে তারা উপস্থিত রয়েছেন।

তারকুমিয়া চেকপয়েন্টে যেখানে লরিগুলো দক্ষিণ পশ্চিম তীর থেকে ইস্রায়েলে প্রবেশ করে, স্ট্যান্ডিং টুগেদার গ্রুপের সদস্যরা এখন নিয়মিত নজরদারি চালাচ্ছেন।

সম্প্রতি তারকুমিয়া পয়েন্টে হামলার ঘটনা ঘটে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজায় বিরামহীনভাবে আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। যুদ্ধের শুরুর দিনগুলো থেকেই গাজাকে অবরুদ্ধ করার ঘোষণা দেয় ইসরায়েলি বাহিনী। ফলে ফিলিস্তিনি এই ভূখণ্ডে খাদ্য, জ্বালানিসহ অন্যান্য মৌলিক পণ্যের চরম সংকট দেখা দেয়, যা পরবর্তীতে চরম মানবিক সংকটে রূপ নেয়। এই পরিস্থিতিতে বর্তমানে বহু ফিলিস্তিনিকে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে।

যদিও আন্তর্জাতিক সমালোচনার জন্য গাজায় সামান্য ত্রাণ পাঠানোর ব্যাপারে পরবর্তীতে সম্মত হন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে ইহুদিবাদী প্রশাসনের কড়াকড়ির কারণে গাজায় সেই ত্রাণটুকুও ঠিকমতো পাঠানো যাচ্ছে না।

সূত্র: বিবিসি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *